লালমনিরহাটের শহরের সড়কগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। গ্রামীণ জনপদের রাস্তাঘাটগুলোও খানাখন্দে ভরা। অনেক স্থানে কাজ শেষ হওয়ার মাস না পেরোতেই উঠে গেছে কার্পেটিং। জেলার কাকিনা-রংপুর আঞ্চলিক সড়কটি মেরামতের মাস না পেরোতেই উঠে গেছে কার্পেটিং। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। তাদের এসব সড়কে চলতে গিয়ে সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি একের পর এক দুর্ঘটনার শিকারও হতে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, জেলা শহরের সড়ক জনপথ থেকে কুলাঘাট বাঁধের বাজার পর্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক, পার্শ্ব সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এসব স্থানে সড়কে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকছে। সরেজমিন দেখা যায়, জেলা শহরটির প্রধান সড়ক ও জনপথ বিভাগ হতে কুলাঘাট বাঁধের বাজার, ব্যস্ততম সড়ক মিশন মোড় থেকে বিডিআর রেলগেট হয়ে নয়ারহাট ও কুলাঘাটগামী সড়কটির প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশের অনেক স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় এতটাই বড় বড় গর্ত হয়েছে যে, পথচারীর সঙ্গে ছোট বড় যানবাহনেও চলাচল করা দায়। সড়কটির নর্থঙ্গেল মোড়, আলোরূপা মোড়, বিডিআর রোড, পুরান বাজার রোড, সাপটানা রোডের মাঝে মাঝে দুই তিন মিটার পরপর অংশবিশেষ ভেঙে গেছে। ফলে বিভিন্ন অফিস, উপজেলা পরিষদ, জেলা সদর হাসপাতাল, বিদ্যুৎ অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগামী লোকজনের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। অটোচালক বাবলু মিয়া জানান, খানাখন্দের কারণে একটি যানবাহনকে পাশ কাটিয়ে যেতে সব সময়ই আতঙ্কে থাকতে হয়। অতিরিক্ত সময় লেগে যায় গন্তব্যে যেতে। এতে যাত্রীরা যেমন বিরক্ত হচ্ছে তেমনি তার মতো অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে।
জানা গেছে, সড়কটি লালমনিরহাট-ফুলবাড়ী সড়ক নামে অভিহিত আছে সড়ক ও জনপথ বিভাগে। প্রতিবছরই সংস্কার (রুটিন মেইনটেন্যান্স) করা হয় সড়কটি। গত ঈদুল-আজহার আগেও জরুরি ভিত্তিতে কিছু ইট-পাথরের খোয়া ফেলে সংস্কার করা হয়। কিন্তু অল্প কয়েকদিন পরই খানাখন্দে আগের অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মমিন বলেন, ‘সড়কটি কুড়িগ্রামের অন্যান্য সড়কের কাজের সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রকল্পের আওতায় মেরামত করার জন্য পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কাজ শুরু হতে আরও তিন মাস লেগে যেতে পারে।’ এ ছাড়া রেগুলার বেসিসে সড়কগুলো সংস্কারের কাজ করা হয় যা এই সড়কের ক্ষেত্রেও করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একদিকে আগের রাস্তা সংস্কারের অনিয়ম, অন্যদিকে রাস্তায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করা হলেও অনেক স্থানেই তা কাজে আসছে না। আবার কোথাও কোথাও নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকলেও তা দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় কাদা মাটি জমে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে যায় সড়কে। রেলওয়ে স্টেশন হতে বড় মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রেলওয়ের রাস্তা সংস্কার হয়নি। খানাখন্দে ভরে গেছে।
রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার আবদুস সালাম বলেন, ‘বাজেট সংকটের কারণে সড়কগুলো সংস্কার করা যাচ্ছে না। বাজেট পেলেই সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।’ পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘পৌরসভার নিজস্ব প্রধান সড়কগুলো মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু সড়ক ও জনপথের সড়ক এবং রেলওয়ের সড়কগুলো মেরামত না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বারবার বলা হলেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।