উত্তরাঞ্চলের মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে নদী ও বিভিন্ন খালবিলে নিষিদ্ধ চায়না ম্যাজিক জাল দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। কারেন্ট জালের পর ভয়ংকর চায়না জালের ফাঁদে মারা পড়ছে দেশি প্রজাতির মাছ। এ জাল থেকে রেহাই মিলছে না পোনাসহ ডিমওয়ালা মাছ এবং অন্য জলজ প্রাণীর। ফলে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন নদী, খালবিল ও জলাশয়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এক শ্রেণির অসাধু শিকারি অবাধে রিং জাল (চায়না দুয়ারি) দিয়ে মাছ ধরছে। এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে আত্রাইয়ে নদী ও খালবিলে পানি কম। নদনদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরনের দেশি মাছ সূক্ষ্ম চায়না জালে ধরা পড়ছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদী, খালবিল ও জলাশয়ে বেড়েছে পানি। প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ সব মাছ নিধন হচ্ছে চায়না জালে। এ জালের অবাধ ব্যবহারের কারণে উপজেলার শতাধিক জেলে পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। জানা যায়, আত্রাই উপজেলার আটটি ইউনিয়নে সহস্রাধিক জেলে পরিবার রয়েছে। তারা সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এবার মৌসুমের শুরু থেকে অনাবৃষ্টি ও উজানের ঢল না থাকায় খালবিলে তেমন পানি নেই। মাছের প্রজনন হয়েছে খুব কম। বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে এসে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আত্রাই নদীর পানি বেড়েছে। এ সুযোগে কিছু অসাধু শিকারির রিং জালে এসব মাছ ধরা পড়ায় প্রজনন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে দেখা দিয়েছে মাছ অন্যদিকে বিপাকে পড়েছে জেলে পরিবার। আত্রাই মাছ বাজারের আড়তদাররা জানান, অন্য বছর বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন শত শত টন মাছ আমদানি হতো। এবার দেশি প্রজাতির মাছ নেই বললেই চলে। আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। নিষিদ্ধ চায়না জালের ব্যবহার বন্ধ না হলে হয়তো আর মিলবে না মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন স্থানে রিং জালের ব্যবহার হচ্ছে। আমরা এগুলো প্রতিরোধে অভিযানও পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জাল আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জড়িতদের জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, নিষিদ্ধ চায়না জাল (রিং জাল) ব্যবহার বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনোভাবেই নিষিদ্ধ এ জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেওয়া যাবে না।