স্বাধীনতা যুদ্ধের পর হারিয়ে যাওয়া অজ্ঞতানামা, বাক প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধা ৪৪ বছর পর স্থানীয় সাংবাদিকের প্রচেষ্টায় ফিরে পেয়েছেন তার আপন ঠিকানা। বাক প্রতিবন্ধী ওই নারীর নাম কাচুমনি। বয়স প্রায় ৮০ বছর। তিনি এখন তাঁর স্বামী, সন্তানের হেফাজতে আছেন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের পর ওই বৃদ্ধা সান্তাহার পৌর শহড়ের ৪ নং ওয়ার্ডের রথবাড়ি এলাকায় আসেন। বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্থানীয় মানুষ তাঁকে 'বুকি' বলে ডাকতে শুরু করেন। প্রথম দিকে সেই বৃদ্ধা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করতেন। পরবর্তীতে ভিক্ষাবৃত্তি করতে শুরু করেন। থাকতেন রাস্তার ধারে। সম্প্রতিক এক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন স্থানীয় সাংবাদিক মো. রবিউল ইসলাম রবীন।
সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বগুড়ার গাবতলি উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নের নিজগ্রামের বকুল ও তার সঙ্গিদের হাতে সেই 'বুকি' কে তুলে দেওয়া হয়। এই সময় সেই বৃদ্ধার পুত্র সন্তান বলে দাবিদার আব্দুস সালাম, বকুলসহ প্রায় ১৫ জন স্বজন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রথবাড়ির বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৃদ্ধার পুত্র বলে দাবিদার গাবতলি উপজেলার নিজগ্রামের আব্দুস সালাম জানান, তার মায়ের নাম শুনেছেন কাচুমনি। তার বাবার নাম আফতাব হোসেন মন্ডল। মুক্তিযুদ্ধের পর মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় তিনি হারিয়ে যান।
সালাম আরো বলেন, গত ৪৪ বছর তাঁরা তাদের হারিয়ে যাওয়া মাকে নানা স্থানে খোঁজ খবর করেও পাননি। এখন খুঁজে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন।
শহীদ আহসানুল হক ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক ও সাংবাদিক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, '৪৪ বছর একজন অসহায় নারী পরিচয়হীন অবস্থায় থাকবে-বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে। সেই ভাবনা থেকে প্রতিবেদন করি। যেন তিনি তার নিজ পরিচয়ে ফিরে পান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল