৩০ জুন, ২০১৯ ১৩:৩৮

২০ স্কুলছাত্রী ধর্ষণ: অভিযুক্ত ২ শিক্ষকের ফাঁসির দাবিতে সিদ্ধিরগঞ্জে মানববন্ধন

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

২০ স্কুলছাত্রী ধর্ষণ: অভিযুক্ত ২ শিক্ষকের ফাঁসির দাবিতে সিদ্ধিরগঞ্জে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড হাই স্কুলের ২০ জনের বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারের ফাঁসি চেয়ে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় ১৩টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার বেলা ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় মানববন্ধনে ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনটি মৌচাক বাসস্ট্যান্ড থেকে সানাড়পাড় বাসস্ট্যান্ড হয়ে এক কিলোমিটার রাস্তা ছাড়িয়ে যায়।

শিক্ষকদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত এই মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরা।

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাশ্চমপপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সানারপাড় আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী আব্দুস সামাদ সিনিয়র মাদ্রাসা, এনআলম মেরিড কেয়ার স্কুল, গ্রিন বাংলা মডেল হাই স্কুল, মৌচাক আইডিয়াল স্কুল, প্রত্যাশা মডেল স্কুল, কুসুমকলি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, কান্দাপাড়া পাবলিক স্কুল, হলিচাইল্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুল, নলেজ আইডিয়াল স্কুল, ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আনন্দলোক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেয়।

এসময় মিজমিজি কান্দাপাড়া, সানারপাড়, পশ্চিমপাড়া, এলাকাবাসীও যোগ দেয় এ মানববন্ধনে।

মানববন্ধনে এসময় উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, নাসিক ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূঁইয়া রাজু, মিজমিজি পশ্চিমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, এন আলম মেরিট কেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম, আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রহিম মেম্বার, যুবলীগ নেতা হাজী সুমন কাজী, যুবলীগ নেতা মাজেদুল ইসলাম মনিসহ স্থানীয় আরও অনেকে।

মানববন্ধনে বক্তারা প্রথমে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে তাদেরকে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করেন।

পাশাপাশি অক্সফোর্ড হাই স্কুলটিকে বন্ধেরও দাবি জানান তারা।

তারা আরও বলেন, ভবিষ্যতে আর কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

এসময় মানববন্ধনে এসে উপস্থিত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  (ক-সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজসহ অন্যরা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আটক করেছি। তাদের দুজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। তাছাড়াও যদি আরও কোন ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীর অভিভাবক মামলা করতে চায় আমরা তাদের মামলা নিবো।

এর আগে ২৮ জুন সহকারি শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও মদদদাতা প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল আরিফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন স্কুলের নির্যাতিত এক ছাত্রীর বাবা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর মামলাটি দায়ের করেন র‌্যাব-১১ এর ডিএডি আব্দুল আজিজ ।


উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ আপত্তিকর ছবি তুলে  ২০ জনের অধিক ছাত্রীকে ব্লাকমেইল করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ কাজে সহায়তা করেন একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার। এ অভিযোগে এলাকাবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে গণধোলাই দেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাব-১১ ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে গ্রেফতারকৃত ওই দুই শিক্ষক পৃথক দুটি  মামলায় পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর