১৭ জুলাই, ২০১৯ ১৮:১২

রায়পুরে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন, প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি শূন্য

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

রায়পুরে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন, প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি শূন্য

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

গত কয়েকদিনে টানা বৃষ্টিতে ভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নদী ভাঙন রোধ করতে না পারলে বিলিন হয়ে যাবে আরও পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি, মসজিদ ও বিদ্যালয়। ভাঙন রোধে কয়েকদফা মানববন্ধন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা লোকজন অবিলম্বে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রত প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। মানববন্ধনে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।

প্রায় এক যুগ ধরে ভাঙছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়ার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদী। সরেজমিনে এসে পানিসম্পদ মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু প্রায় তিন বছরেও ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। এর আগেও স্থানীয় সাংসদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী পাঁচবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৯ মে প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে আসেন। পরে তারা দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে পথসভায় মেঘনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। বর্ষা মৌসুমের আগেই চরকাচিয়ার ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে বলে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দু’জনেই ওই সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর আগেও চারবার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও সরকারের স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মেঘনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতি দেন।

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ছালেহ মিন্টু ফরাজি জানান, মেঘনা নদীর ভাঙনে গত চাঁর-পাঁচ বছরে প্রায় ৩০০ একর আবাদি জমি ও দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভূমিহীন হয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। নদীভাঙনে চর কাছিয়া গ্রাম বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখনই ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা না নিলে ভূমিহীন হয়ে পড়বে কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ। 

কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, ১২ বছর ধরে স্থানীয় এমপি ও সরকারের অনেক কর্মকর্তা সরেজমিনে এসে নদীভাঙনের চিত্র দেখেন। কিন্তু ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ পরিদর্শনে আসা মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিও ফাইলবন্দি হয়ে আছে। প্রতিশ্রুতিটি বাস্তবায়ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নদীভাঙন পরিদর্শনে এসে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় আশার আলো দেখেন ভাঙনের হুমকিতে থাকা মানুষগুলো। কিন্তু মন্ত্রীদের প্রতিশ্রুতির আড়াই বছরেও কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ হন তারা। এর আগেও এক সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী ভাঙন ঠেকানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ভাঙনরোধের জন্য পাউবোর প্রধান কার্যালয়ে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। এখনো প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।
    

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর