২০ জুলাই, ২০১৯ ১২:৩৬

নড়িয়া-জাজিরা সড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

নড়িয়া-জাজিরা সড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন

শরীয়তপুরের পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৪৪০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যা বিপদসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচে।

গত ১০ দিনে ১৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী কিছু এলাকায় পানি উঠে প্লাবিত হয়েছে। পানি উঠার কারণে নড়িয়া-জাজিরা সড়কে যানবাহ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই সড়কের পাচুখারকান্দি এলাকায় বিকল্প সড়ক ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।

আর নদীতে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নড়িয়ার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামে পদ্মা নদীর অস্থায়ীভাবে তীর রক্ষা কাজের ১০০ মিটার অংশ ধসে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়,শনিবার পদ্মা নদীর পানি নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে ৪৪০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আর পানির বিপদসীমা হচ্ছে ৪৪৫ সেন্টিমিটার। গত ১০ দিনে পদ্মা নদীতে ১৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নড়িয়ার মোক্তারেরচর, চরআত্রা, নওপারা, জাজিরার বিলাশপুর, বড়কান্দি, পালেরচর, ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা, তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওই সকল এলাকার ফসলি জমি, কাচা-পাকা সড়ক ও মানুষের বসত বাড়ির উঠানে পানি উঠেছে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নড়িয়া-জাজিরা সড়কের শেহের আলী মাদবরকান্দি,পাচুখারকান্দি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ওই সড়কের পাচুখারকান্দি এলাকায় একটি সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। ওই সেতুর বিকল্প সড়কটি ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকের পড়েছে। বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সি বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে স্রোত রয়েছে। স্রোতের কারণে ভাঙন রোধে নদীর তীরে ফেলা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। অন্তত ১০০ মিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। ওই বালুর বস্তা তলিয়ে যাওয়ার কারণে ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

নড়িয়া-জাজিরা সড়কের অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ৮-১০ দিন যাবৎ পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাচুখারকান্দি এলাকার বিকল্প সড়কটি ভেঙে পদ্মার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি মানুষ ওই স্থান দিয়ে পায়ে হেটেও যেতে পারছে না।

এদিকে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর তীর রক্ষা কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার ওই প্রকল্পের সিসি ব্লক নির্মাণের ইয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারণে বুধবার থেকে সিসি ব্লক নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। আর নদীতে স্রোত থাকার কারণে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা ব্যহত হচ্ছে। স্রোতের কারণে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করতেও সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে জিও ব্যাগ ফেলা ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রকল্প এলাকার বেশ কিছু স্থান তলিয়ে গেছে। ওই সব স্থানে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। আর স্ত্রোতের কারণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে সমস্যা হচ্ছে। এখনও তেমন কোনও ভাঙন নেই। যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মামুন উল হাসান বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে তা বন্যার পর্যায় আসেনি। আমরা বন্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সভা করা হয়েছে। সকলকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার জন্য নিদের্শ দেওয়া হয়েছে

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর