২০ জুলাই, ২০১৯ ১৯:১০

‘নাইওরিতে এসে ১ গ্লাস দুধ পানে নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু’

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

‘নাইওরিতে এসে ১ গ্লাস দুধ পানে নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু’

প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ফার্সি আক্তার (২০) নামের এক নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত ফার্সি উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের হোগলবুনিয়া গ্রামের মো. তোফাজ্জেল হোসেন মৃধার মেয়ে। বিয়ের পর স্বামী মো. অপু (২২) কে নিয়ে চাচাতো চাচার বাড়িতে দাওয়াতে গিয়ে এক গ্লাস দুধ পানে অসুস্থ হয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, গত ১৮ জুন মঙ্গলবার উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের আমখোলা বাজারের মৃত আলম খানের ছেলে মো. অপু (২২) এর সাথে ফার্সি আক্তারের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। পরে গত ১৫ জুলাই সোমবার ফার্সিকে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি তুলে দেয়া হয়। শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরতি নাইওরিতে গত ১৭ জুলাই বুধবার ফার্সি স্বামীসহ বাবার বাড়ি আসার পরে ঐ নববধূর মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে ফার্সির বড় ভাই ইউপি সদস্য মো. সায়েম মৃধা জানান, আমার বোন ফার্সির বিয়ের আগে পাশের বাড়ির চাচাতো চাচা ফরিদ মৃধার ছেলে রায়হান তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং বিভিন্ন সময়ে আমার বোনের মোবাইলে মেসেজ পাঠাত। তবে আমরা রায়হানের সাথে আমার বোনকে বিয়ে দেয়নি। ঘটনার দিন শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আমার চাচাতো চাচা ফরিদ মৃধার মেয়ে তামান্নার অতি পিড়াপিড়িতে তাদের বাসায় বেড়াতে যায় ফার্সি ও তার স্বামী। সেখানে দাওয়াতে আমার বোন ফার্সি ও তার স্বামী অপুকে তারা প্রথমে চিনির শরবত পান করতে দেয়। পরে এক গ্লাস দুধ নিয়ে এসে ফার্সির স্বামী অপুকে পান করতে দেন। কিন্তু পেটে সমস্যার কারণে ঐ দুধ অপু পান না করলে তারা ফার্সিকে পান করতে বলেন। ফার্সি অকপটে তা পান করেন। এরপর সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফার্সির বুকে প্রচণ্ড জ্বালা-যন্ত্রণা শুরু হয় এবং এর সাথে বমি হতে থাকে। ফার্সির শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে আমরা রাত সাড়ে ১০ টার দিকে গাড়িযোগে ফার্সিকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইমাম সিকদার ফার্সিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বিষয়টি তিনি গলাচিপা থানা পুলিশকে অবহিত করেন। 

এদিকে চাচাতো চাচা ফরিদ মৃধার স্ত্রী হেলেনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি দুধ পান করানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ফার্সিরা আমাদের আত্মীয়। তাই দাওয়াত করে আমরা তাদের খাইয়েছি। তবে দুধের মধ্যে এমন কিছু মেশানো হয়নি যে তাতে ফার্সির মৃত্যু হবে। একই দুধ তারা সেমাইতেও ব্যবহার করেছে বলে হেলেনা বেগম জানান।

এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আখতার মোর্শেদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে। অন্যদিকে নিহত ফার্সির পরিবার জানায়, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমরা মামলা করব।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর