২১ জুলাই, ২০১৯ ১৩:১৯

শিশুর কাটা মাথা: গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তি মাদকসেবী

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

শিশুর কাটা মাথা: গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তি মাদকসেবী

নেত্রকোনায় শিশুর মাথা বহনকারী গণপিটুনিতে নিহত যুবক কুখ্যাত মাদকসেবী ছিলো বলে এলাকাবাসীসহ স্বজনরা জানায়।

নিহত রবিনের মা মাজেদা খাতুন জানান, তাদের বড় ছেলে রবিন (৩০)। বাবার মতো রিক্সা চালানোসহ রাজমিস্ত্রী বা অন্যান্য কাজ করতো। কিন্তু তার মাদক সেবনের ফলে থানায় দেয়া হয়েছে কয়েকবার। মাদক নিরাময় কেন্দ্রেও দেয়া হয়েছে অনকেবার। এসব কারণে স্থানীয় হওয়ার পরও নিজেদের জায়গা বিক্রি করে এখন ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। তাকে বিয়ে করানোর পর স্ত্রীকেও মারধর করতো। যে কারণে তার স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছে বাচ্চাসহ। 

তিনি বলেন ঘটনার ১০/১২ দিন আগে থেকেই রবিন লাপাত্তা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বৃহস্পতিবার খবর পাই যে একটি শিশু বাচ্চার মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় মানুষ তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারোর উপর কোন অভিযোগ নেই। 

এদিকে এলাকাবাসী জানান, রবিনের ভয়ে আতঙ্কিত থাকতেন তারা। পাড়ার দোকান থেকে এটা সেটা নিয়ে নিতো টাকা ছাড়াই। তার মৃত্যুতে কারোর ভেতরে কোন অনুশোচনাও লক্ষ্য হয়নি। 

এদিকে রবিবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের শহীদ মিনার মোড় থেকে সুমাইয়া (২৫) নামের এক নারীকে ছেলেধরা বলে ধাওয়া করে থানায় দিয়েছে জনতা। সুমাইয়ার বাড়ি জয়পুর হাট জেলায় জানা গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার গতিবিধি সন্দেহ হচ্ছিল। এমনকি জিগেস করলে এক এক ঠিকানা জানায়। তার পিতার নাম জানায় ছানাউল। এ এলাকায় আসার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে সে সুমন নামের এক ছেলের সাথে সম্পর্ক করে এসেছে বলে জানায়। এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, সে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে জায়গা বদল করে অবস্থান নিচ্ছে। তার পেশা সর্ম্পকেও অনেকের খারাপ ধারণার কথা বলেন। 

অপর দিকে বেলা ১২টায় নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম শহরের সরকারী মহিলা কলেজে সতর্কীকরণ সমাবেশ করেন। তিনি বলেন, শিশু সজিবের বাবার সাথে রবিনের মিল ছিলো। সজিবকে একটি নির্মানাধীণ ভবনের টয়লেটে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়। সজিব হয়তো বলে দিতে পারে এই ভয়েই তাকে হত্যা করে বলে ধারণা হচ্ছে। পরবর্তীতে সজিবের মাথা নিয়ে মদ্যপান করে যাওয়ার সময় জনতা তাকে তল্লাশী করে মাথা পাওয়ায় গণধেলাই দেয়। এতে সে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। 

তবে এটি পদ্মা সেতুর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। গুজব এবং মানুষের আতঙ্কের জন্য আমরা পুলিশ পেট্রোল চেকপোস্ট বাড়িয়েছি। মসজিদসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সতর্ক করছি। মানুষকে পিটিয়ে হত্যা একটি ফৌজদারী অপরাধ। এটি না করতেও তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, মানুষ সন্দেহ করে বিভিন্ন মানসিক রোগীকেও রক্তাক্ত করছে। যা ঠিক না। সন্দেহ হলে পুলিশে দিতে অনুরোধ করেন। 

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর