১৮ আগস্ট, ২০১৯ ১৮:৩৯

পঞ্চগড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টি গাছ বিক্রির অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টি গাছ বিক্রির অভিযোগ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের জোতমনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০টি গাছ অনুমোদন ছাড়াই বিক্রি করেছে কর্তৃপক্ষ। এক যুগেরও বেশি দিন পুরোনো ওই গাছগুলো বিদ্যালয়ের চার পাশে দাড়িয়ে সৌন্দর্য সৃষ্টি করে আসছিল। গাছগুলোর মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা হলেও নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই গাছগুলো মাত্র ১ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছেন তমিজউদ্দিন নামের স্থানীয় এক কাঠ ব্যবসায়ী। রবিবার দুপুরে ওই কাঠ ব্যবসায়ীর লোকজন গাছ কাটা শুরু করেন। কাঠাল, বট এবং ইউক্যালিপ্টাস প্রজাতির গাছগুলো বৃহৎ আকৃতির ছিল। 

বিনা কারণে বিদ্যালয়ের প্রায় ৪ লাখ টাকা মূল্যের বড় বড় ৩০ টি গাছ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই অল্প দামে বিক্রি করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয়রা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, এই গাছগুলো গ্রীষ্মকালে শিক্ষার্থীদের ছায়া দিত। বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে আসছিল। কিন্তু কোন প্রকার কারণ ছাড়াই গাছগুলো বিক্রি হচ্ছে। প্রধানশিক্ষক একটি প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতা নিয়ে গাছগুলো বিক্রি করে টাকা আত্নসাতের চেষ্টা করছেন। 

জেলা প্রার্থমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করতে হলে প্রথমে অনুমোদন লাগবে। বনবিভাগ কর্তৃক গাছের দাম নির্ধারণের পর নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। গাছ বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। ওই বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির প্রক্রিয়ায় এসব নিয়ম মানা হয়নি।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী জানান, ময়দানদিঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের নির্দেশে এই গাছগুলো কাটা হয়েছে। গাছগুলো আশে পাশের জমিগুলোতে ক্ষেতের ক্ষতি হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিল বলে গাছগুলো কেটে ফেলার উদ্যেগ নেয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে শিক্ষা বিভাগের বা প্রশাসনের অনুমতি নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, গাছগুলো ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় সরকারি বিধি না মেনে গাছগুলো বিক্রি করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা গাছগুলো কাটার আগে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করেছি। এ ব্যাপারে ময়দান দিঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জানান, আমাকে স্কুল গাছ কাটার কথা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আমি তাদেরকে নিয়ম মেনে গাছ কাটার পরামর্শ দিয়েছি।

জেলা প্রার্থমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহাজাহান সিদ্দিকী জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে একদিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান জানান, গাছগুলো আটক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর