৩১ মার্চ, ২০২০ ১৪:৫৯
লালমনিরহাটের ইটভাটায় নেই করোনার প্রভাব

'বাহে, হামরা কাম না করলে হ্যামাক কায় খাবার দিবে?'

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

'বাহে, হামরা কাম না করলে হ্যামাক কায় খাবার দিবে?'

কভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কলকারখানায় বন্ধ থাকলেও এর বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি লালমনিরহাট জেলার ইটভাটাগুলোতে। জেলার সবগুলো ইটভাটা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দেখা গেছে, ভাটায় আগের মতোই কর্মচঞ্চল পরিবেশে আগুন জ্বলছে, চিমনি দিয়ে বের হচ্ছে পোড়া ইটের ধোঁয়া, কাজ করছেন শ্রমিক, তবে বেচা-কেনা হচ্ছে ঝিমিয়ে। কোনো কিছুই থেমে নেই। সবকিছুই হচ্ছে আগের মতোই। করোনা স্থবিরতার কোনো প্রভাবই পড়েনি অধিকাংশ ইটের ভাটায়।

ভাটার শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহায়তায় এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। করোনার কারণে কাজ বন্ধ করে ঘরে বসে থাকলে স্ত্রী-ছেলেমেয়ে নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে হবে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা সূত্রে জানা যায়, জেলা সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা ও পাটগ্রামের ৪৫টি ইটভাটা রয়েছে। জানা যায়, ইটভাটা নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। যার মেয়াদকাল থাকে এক বছর। তারপর ডিসির কার্যালয় থেকে ইস্যু করা হয় তিন বছর মেয়াদি লাইসেন্স। এসব ইটভাটায় প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মরত। যারা রয়েছে করোনা ঝুঁকিতে।

মঙ্গলবার সকালে জেলার বেশ কয়েকটি ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, ভাটাগুলোতে কাজ কর্ম চলছে আগের মতোই। প্রতিটি ভাটায় শ্রমিকরা কাজ করছে। সেখানে করোনার কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। একসঙ্গে অনেক শ্রমিক পাশাপাশি গাদাগাদি করে কাজ করছেন প্রতিদিনের মতোই। দুই একজন ব্যতিত কারো মুখে নেই মাস্ক। তবে, আনাগোনা কম দেখা গেছে ক্রেতা সাধারণের।

এলাকাবাসীর শঙ্কা, ভাটাগুলোতে কাজ করায় ধুলা-বালি ইত্যাদি কারণে এমনিতেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে শ্রমিকরা। বর্তমানে করোনার কারণে তাদের সে ঝুঁকি মারাত্মক আকারে দেখা দিয়েছে। অথচ শ্রমিক-মালিক কেউই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছেন না। তাদের এ গাফিলতির কারণে যে কোনো সময় তারা করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। আর তা ছড়িয়ে পড়তে পারে আশপাশের এলাকায়।
লেবু মিয়া নামের এক ইটভাটার শ্রমিক বলেন, বাহে, হামরা কাম না করলে হ্যামাক কায় খাবার দিবে? দিনে যা আয় রোজগার হয়, তাকে দিয়া হামার সংসার চলে যায়।

হাতিবান্ধার ইট তোলা শ্রমিক ঝন্টু বলেন, আমাদের ভাটা থেকে মালিকপক্ষ কোনো নিষেধ করেনি। তাছাড়া বসে থাকলে চলে না। কয়েক দিন পর থেকেই তো বৃষ্টি শুরু হবে। তখন আর কাম করা যাবে না। তাই এখন নিয়মিতই কাজ করছি।

এ ব্যাপারে জেলার এক ভাটা মালিক বলেন, করোনার কারণে শ্রমিকরা কম আসছেন, যারা আসেন তাদের মাক্স দেয়া আছে। আপাতত সীমিত আকারে শ্রমিকরা কাজ করছে এখানে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর