প্রশাসনের কড়াকড়ির পরও লালমনিরহাটে অঘোষিত লকডাউন উপেক্ষার প্রবণতা অনেক হারে বেড়েছে। মঙ্গলবার সকালেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়েছেন প্রচুর মানুষ। মুদি এবং ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও ক্রমান্বয়ে এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলার হিড়িক পড়েছে।
এই সংখ্যা শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলেই বেশি, গ্রামের মানুষ যেন কোন ক্রমেই করোনা নিয়ে ভাবছে না। বিশেষ করে জেলার গোশলা বাজারে অপ্রয়োজনীয় এবং সেনা মৈত্রি বাজার ও রেল বাজারে প্রচুর সংখ্যক ইলেক্ট্রনিক্স দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। সরকারি নির্দেশ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর থাকলেও অঘোষিত লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না লালমনিরহাটে।
এদিকে জেলা প্রশাসন জনগণের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলার ৫টি উপজেলার ৭টি বাজার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠসহ খোলা জায়গায় স্থানান্তর করেছে। সোমবার রাতে জেলা প্রশাসন এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জেলার ৭টি বাজার স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ঘোষণা বলবৎ থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গত ১১ এপ্রিল জেলার সদর উপজেলার গুড়িয়াদহ গ্রামে বাবা ছেলের দেহে প্রথমবারের মতো করোনা শনাক্ত হওয়ায় ওইদিন রাতেই ওই এলাকা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এছাড়া জেলাব্যাপী প্রশাসনের নজরদারীও বাড়ানো হয়।
প্রথমদিকে মানুষের মধ্যে আইন মান্য করার প্রবণতা থাকলেও আস্তে আস্তে তারা অসহিষ্ণু হয়ে পড়েন। অনেকেই বিনা কারণে রাস্তাঘাটে বেড়িয়ে পড়েন। মুদি এবং ওষুধের দোকান ব্যতীত অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও জেলার বিভিন্ন স্থানে এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার হিড়িক পড়েছে। এছাড়াও বাজারঘাট, রাস্তা এবং ব্যাংকেও অনেক মানুষ দেখা গেছে। রিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের উপস্থিতি রয়েছে চোখে পড়ার মতো। টিসিবি পণ্য বিক্রির প্রতিটি পয়েন্টেও রয়েছে দীর্ঘলাইন। এসব স্থানে শারীরিক দূরত্ব অনুসরণের কোনো বালাই দেখা যাচ্ছে না। জেলার অনেক এলাকায় প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো চিত্র দেখা গেছে।
জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা পদক্ষেপ হাতে নিলেও তা তেমনটা কাজে আসছে না। জেলা প্রশাসন জেলার হাটবাজার গুলোতে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময় বেধে দিলেও সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে এই আদেশ অমান্য করে হাটবাজারগুলোতে অনেক রাত পর্যন্ত মানুষের আড্ডা চলছে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানিয়েছেন, অকারণে ও অপ্রয়োজনে ঘোরাফেরার অপরাধে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক মানুষকে বিভিন্নভাবে শাস্তি ও জরিমানা করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য নানা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ