বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও এবার নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে ফসল কাটা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। সময় যাচ্ছে কিন্তু সেই তুলনায় ধান কাটা শেষ করা যাচ্ছে না। প্রতিবছর যেখানে ২২ থেকে ২৫ হাজার শ্রমিক আসতো শুধু বাইরে থেকে, এবার সেখানে আড়াই থেকে তিন হাজার মাত্র। ধানকাটা শ্রমিকের চেয়ে অন্য পেশার শ্রমিকই বেশি। সব মিলিয়ে সাড়ে ১০ হাজার শ্রমিক হাওরে ধান কাটছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
এদিকে, জেলা প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগ থেকে ৬০টির মতো হারভেস্টার মেশিন দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও কৃষকরা বলছেন, মেশিন সবার ভাগ্যে জুটছে না।
ডিঙ্গাপোতা হাওরের বেশকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, একটি মেশিন দিয়ে ধান কাটার কারণে অনেকের জমির ধান এখনো পড়ে আছে। আবার সেই মেশিন থেকেও সরকার নির্ধারিত ৫০০ টাকার বেশি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করছে কৃষকরা।
মেশিন চালক রাসেল জানায়, মালিক যেভাবে বলেন সেভাবেই নিতে হয়। যার কাছ থেকে যেমন পারছে নিচ্ছে।
কৃষক হুমায়ুন কবীর জানান, ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা দিয়েও তিনি শ্রমিক দিয়ে কাটাচ্ছেন। কারণ জোয়ারের পানি সন্নিকটে। যেকোন সময় ডুবে যাবে। কিন্তু একটি মেশিন ধান কাটছে। তাই তিনি তাড়াতাড়ি কাটানোর সুযোগটা পাচ্ছেন না।
কৃষক রবি দাস জানান, ডিঙ্গাপোতা হাওরে বাইরের একজন শ্রমিকও এবার আসেনি। আপনারাই ঘুরে দেখেন। এদিকে মেশিনে নিচ্ছে যার থেকে যেমন বেশি পারছে। তাই তাড়াতাড়ি কাটা না হলে দুই এক দিনের মধ্যে পানি ঢুকলেই ১০ থেকে ১২ ঘণ্টায় পুরো হাওর ডুবে যাবে বলে জানান তিনি।
কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা সব কেটে নিতে পারবে বলে আশা করি। মেশিন ভেতরের দিকে কাটছে তাই হয়তো সবাই পাচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে পাবে। মেশিনে কাটা মাড়াই সব একসাথে হয়ে যাচ্ছে অল্প খরচে। কাঠাপ্রতি দাম সহনীয় পর্যায়ে নিতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা