মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ও জমিতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে পৃথক ঘটনায় দুই পক্ষের সংর্ঘষে দুই জন নিহত হয়েছেন। রাজৈর থানা পুলিশ বুধবার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুরে মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করা হয়েছে।
পৃথক ঘটনায় নিহতরা হলেন রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের মৃত জীতেন মন্ডলের ছেলে নির্মল মন্ডল (৫৫) ও একই উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের উল্লবাড়ী গ্রামের সুধীর রায়ের স্ত্রী প্রমিলা রাণী রায় (৫০)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের পরী বাইনের সাথে নির্মল মন্ডলের (৫৫) বিরোধ চলে আসছিল।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নির্মল মন্ডল পরী বাইনের রাস্তার পাশে বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় নির্মল মন্ডলকে উদ্দেশ্য করে কটুবাক্য করলে এক পর্যায়ে সংর্ঘষের রূপ নেয়। এ সময় নির্মল মন্ডলের মাথায় হাতুিড় দিয়ে আঘাত করলে দ্রুত রাজৈর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত ১টার দিকে নির্মল মন্ডল মারা যায়। এই ঘটনায় আরো দুই জন আহত হয়।
রাজের থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে প্রতিপক্ষ পংকজ বিশ্বাস, শংকর বিশ্বাসসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত নির্মল মন্ডল লক্ষীপুর গ্রামের জীতেন মন্ডলের ছেলে। তার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে পরী বাইনের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।
অন্যদিকে রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের উল্লাবাড়ী এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে জমিতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে কমলেশ রায়ের সাথে সুকান্ত রায়ের বাক-বিতন্ডা হয়।
এ সময় সুকান্তের মা প্রমিলা রানী রায় ঝগড়া মিমাংসা করার চেষ্টা করলে ধাক্কা লেগে তিনি পরে যান। এতে দুইজনের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে সুকান্ত তার মাকে নিয়ে রাজৈর হাসপাতালে আনার সময় সেনদিয়া এলাকায় প্রমিলা রানী রায় (৫০) ভ্যান থেকে পরে ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রমিলা রানী রায় উল্লাবাড়ী এলাকার সুধীর রায়ের স্ত্রী।
প্রমিলা রানীর ছোট ছেলে সুজল রায় জানান, আমার মাকে ইচ্ছে করে কমলেশ হত্যা করেছে। মা বড় ভাইয়ের সাথে মীমাংসা করতে গিয়েছিল, তখন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপতালে নেয়ার পথে মারা যায়। এই ঘটনায় বিচার চাই।
এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ওসি খোন্দকার শওকত জাহান জানান, কদমবাড়ীর ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে মাদারীপুর মর্গে পাঠিয়েছি। নিহতের পরিবার মামলা দিয়ে ফাইলভুক্ত করা হবে। দোষীদের গ্রেপ্তারেরও চেষ্টা চলছে। তবে উল্লবাড়ীর ঘটনাটি এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন