হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ভিজিডির আত্মসাৎ করা চালবোঝাই ট্রাকসহ ইউনিয়ন অফিসে ঢোকার সময় কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসাকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
পরে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল, নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে ওই চাল সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান মুসার বিরুদ্ধে গত ১৯ এপ্রিল ভিজিডির চাল ও নারীদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সমরগাঁও গ্রামের শরিয়ত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি। এরপর তড়িঘড়ি করে চেয়ারম্যান মুসা পরদিন ২০ এপ্রিল খাদ্যগুদাম থেকে এপ্রিল মাসের চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের চাল হিসেবে বিতরণ করেন।
খাদ্য গুদাম সূত্র জানায়, প্রতি মাসেই চেয়ারম্যান চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে এপ্রিল মাসের চাল গেল কোথায়। এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুচতুর চেয়ারম্যান মুসা বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ট্রাকভর্তি চাল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এ সময় জনতার হাতে আটক হন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত মার্চ মাসের ভিজিডির চাল সুবিধাভোগীরা পাননি। এ ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এবং লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এ ঘটনা স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফলে চেয়ারম্যান এপ্রিল মাসের ভিজিডির চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের বলে বিতরণ করেন।
এই অবস্থায় বিভিন্ন স্থান থেকে চাল ক্রয় করে আত্মসাতকৃত চাল বুধবার বিতরণ করে দায়মুক্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু জনতার কাছে শেষ রক্ষাও হল না চেয়ারম্যান মুসার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা বলেন, অতীতেও আমরা ২-৩ মাসের চাল একসঙ্গে বিতরণ করেছি। এবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে চাল বিতরণ করতে দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ যে গুজব আমার বিরুদ্ধে ছড়ানো হয়েছে তারা আওয়ামী লীগ নামধারী বিএনপি-জামাতের কর্মীরা করেছে। আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের গুজব সৃষ্টি করে মান-সম্মান নষ্ট করতে চায় তারা।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল গণমাধ্যমকে বলেন, ভিজিডির চাল নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আমরা এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তবে তিনি ভিজিডির চাল বিতরণ করুক বা না করুক, তিনি একটি অনিয়ম করেছেন। আমরা এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন বরাবর লিখব। ঊর্ধ্বতনরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম