কুষ্টিয়ারার দৌলতপুুরে ইস্যু হওয়ার ১৩ মাস পর ভিজিডি কার্ড হাতে পেয়েছেন মদিনা খাতুন নামে এক নারী। ১৩ মাসের উত্তোলন হওয়া ১২ বস্তা চাল মদিনা খাতুনের জাল টিপসই দিয়ে তা উঠিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে।
মদিনা খাতুন ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউসার খন্দকারের স্ত্রী। মদিনা খাতুনের নামে উত্তোলন হওয়া ভিজিডির ১২ বস্তা চাল কোথায় গেল তা জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ মার্চ মদিনা খাতুনের নামে দৌলতপুর মহিলা বিষয়ক কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি খাদ্যশস্যের ভিজিডির কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার নম্বর ৭১। কিন্তু এ কার্ড ইস্যু হওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না মদিনা খাতুন। তবে তার কার্ড ব্যবহার করে গত ১২ মাসে ৩০ কেজি করে ১২ বস্তা চাল উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মদিনা খাতুন জানান, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে স্থানীয় মহিলা মেম্বার তাকে ভিজিডি চালের কার্ড করে দেওয়ার কথা বললে তার কথা অনুসারে নিজের ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দেন তিনি। কিন্তু অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও তার নামে কোনো কার্ড ইস্যু হয়নি বলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানানো হয়। সম্প্রতি এলাকার যাদের নামে কার্ড বরাদ্দ হয়েছে তারা চাল উত্তোলন করতে গিয়ে তার নামে (মদিনা কাউসার) একটি কার্ডে চাল উত্তোলন হতে দেখেন। ঘটনাটি শোনার পরে মদিনা খাতুন ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে খোঁজ নিলে সেখান থেকে জানানো হয় তার নামে কোনো কার্ডই ইস্যু হয়নি। হঠাৎ করে ১২ মাসের ১২ বার যে কার্ডে চাল উত্তোলন করা হয়েছে সেই কার্ডটি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মনিরুল ইসলাম মদিনা খাতুনের কাছে পৌঁছে দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। বিষয়টি এড়িয়ে যাবার জন্য মনিরুল ইসলাম মদিনা খাতুনকে বলেন, 'তোমার কার্ড ইউনিয়ন পরিষদে পড়েছিল।'
মদিনা খাতুন বলেন, আমি নিজের নাম স্বাক্ষর করতে জানি। কিন্তু ওই কার্ডে ১২ বার চাল ওঠানো হয়েছে টিপসই দিয়ে। তিনি বলেন, তা’হলে আমার চাল গেল কোথায়? আর আমার নামে বরাদ্দ হওয়া চাল উঠালোই বা কে? মদিনা খাতুন এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে।
এ বিষয়ে ইউপি মেম্বার মনিরুল ইসলামর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে রজি হননি।
তবে খলিসাকুন্ডি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে এ নিয়ে কি করা যায় সেটা দেখছি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সরকারী বরাদ্দের চাল আত্মসাতের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল