লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকলেও জনসমাগম নিষিদ্ধ। এতে উপজেলার পান চাষিদের পান বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। বাজারে পান উঠালেই পুলিশ ধাওয়া দেয়। পান বিক্রি না করেই ফিরে আসতে হয় চাষিদের।
পান চাষ ও বিক্রির টাকা দিয়েই অন্তত ১২ হাজার পরিবারের বছর পার হয়। করোনা ভাইরাসের এ দীর্ঘ সময়ে পান বিক্রি বন্ধ থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
এদিকে গাছ থেকে পান সংগ্রহের পর বিক্রি করতে না পারায় খালে কিংবা ডোবায় ফেলে দিতে হচ্ছে এসব পান। অনেক জায়গায় সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়ায় গাছেই পচন ধরেছে পান পাতায়। সব মিলিয়ে ক্ষতির আশংকায় চাষিদের মাথায় হাত।
সপ্তাহে অন্তত একদিন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রশাসনের কাছে পান বিক্রির অনুমতি চাচ্ছেন চাষিরা।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার প্রায় ৩শ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়। এর মধ্যে উত্তর চর আবাবিল, দক্ষিণ চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে পান চাষ হয়। এসব পান স্থানীয় হায়দরগঞ্জ বাজার, ক্যাম্পেরহাট ও রায়পুরসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার পান উৎপাদন হয় এ উপজেলায়।
পান বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তাকভির হাসান নামে একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তার ওই লেখায় অসহায়ত্বের কথা ফুটে উঠেছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পান বিক্রির মৌসুম। এই পান চাষের সাথে প্রায় ১২ হাজার মালিক শ্রমিক জড়িত। এই জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের তদারকিতে ঝুঁকিমুক্ত কোনো খোলা মাঠে পানের বাজার বসানোর জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দি বলেন, করোনার কারণে বাজার বসতে দিচ্ছে না। এ কারণে চাষিরা পান বিক্রি করতে পারছে না। এতে তাদের প্রচুর ক্ষতি হবে। অন্তত সপ্তাহে একদিন হাটে পান বিক্রির অনুমতি দেওয়া উচিত। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করাবো।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, পান চাষিদের দুর্ভোগের কথা শুনেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পান বিক্রির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল