করোনা ভাইরাসের কারনে বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চাতালসহ মিল কারখানা বন্ধ রয়েছে। ফলে চাতাল ও মিলে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে।
উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসাবে পরিচিত দুপচাঁচিয়া উপজেলার ২ টি পৌরসভাসহ ৬ টি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে প্রায় ১ হাজার এর অধিক চাতালসহ মিল রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের মত চলতি মৌসুমে ইরি বোর ধান কাটা মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। অনেকে ধান কাটা মাড়াই ইতিমধ্যে শেষও করেছে। বাজারে নতুন ধানের চালও উঠতে শুরু করেছে। করোনা ভাইরাসের কারনে ব্যবসায়ীরা ধান ক্রয় করে চাতালে বহন করতে পারছে না। ফলে উপজেলার চাতাল ব্যবসায়ীরা তাদের চাতাল বন্ধ রেখেছে।
গত দেড়মাস যাবত সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এই করোনা ভাইরাসের কারণে উপজেলার মিল চাতালগুলো প্রয়োজনীয় ধানের অভাবে ও সরকারের নির্দেশনার কারণে বন্ধ থাকায় এই সব মিল কারখানায় কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। বর্তমানে তারা অর্থ অভাবে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক জানান, করোনার কারনে তারা চাতাল মিল কারখানা বন্ধ রেখে বেকার হয়ে অলস জীবনযাপন করছেন। তিনি আরো জানান, এই উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ১ হাজার চাতাল মিল রয়েছে। সরকারি তালিকাভুক্ত চাতাল মিলের সংখ্যা ৪শ ৯২টি। এর মধ্যে ৪শ ৭৮টি চাতাল ও ১৪টি অটো বা হ্যাসকিং মিল রয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে চাতাল মালিকরা হাটবাজার থেকে ধান সংগ্রহ করতে পারছে না। বিভিন্ন জেলায় নতুন ধান কাটাই মারাই হলেও ঐ এলাকার হাটগুলো থেকে ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাধ্য হয়েই মিল চাতালগুলো বন্ধ রেখেছেন। এ
কই সাথে তিনি জানান, তাদের প্রতিটি চাতালে গড়ে প্রায় ২৫ জন করে শ্রমিক কাজ করে। বগুড়া জেলার বাহিরে গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এলাকার অনেক শ্রমিক স্ব-পরিবারে চাতালে কাজ করে থাকে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে চাতালগুলো বন্ধ হলে স্থানীয় শ্রমিকরা তাদের বাড়িতে ফিরে গেলেও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমিকরা এখনো স্ব-পরিবারে বিভিন্ন চাতালে রয়েছে। এই শ্রমিকগুলো সরকারি ভাবে কোন অনুদান পাচ্ছে না। ফলে চাতাল মিল মালিকরাই তাদের খাওয়া খরচ বহন করছে। এতে তারা আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কে.এম গোলাম রাব্বানী জানান, বাজারে নতুন ধান না থাকায় চাতাল মিলগুলো বন্ধ রয়েছে। চলতি ইরি বোর মৌসমে উপজেলায় ১ হাজার ৬শ ৫১ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ২৬ এপ্রিল থেকে এই ধান সংগ্রহের অভিযান শুরু হবে। ধান সংগ্রহের পর পরই চাতালসহ মিল কারখানাগুলো চালু হলে শ্রমিকদের দুর্ভোগ কমে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল