কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে অসুস্থতার কারণে ধান কাটতে না যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবদুল জলিল নামে এক শ্রমিক পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে নারীসহ ওই শ্রমিক পরিবারের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খিলা ইউনিয়নের সাতেশ্বর গ্রামে। আবদুল জলিল ওই গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে।
আবদুল জলিলের অভিযোগ, একই গ্রামের বাসিন্দা খিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানার নির্দেশে এবং তার পিতা আবুল কালাম মেম্বারের নেতৃত্বে দুই দফায় এই হামলা চালানো হয়েছে। এভাবে হামলার শিকার হলেও অর্থের অভাবে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
আবদুল জলিল আরও জানান, গত সপ্তাহে পূর্বের চুক্তিনুযায়ী কালাম মেম্বারের ভাই আবুল কাশেমের ধান কাটার জন্য গেলে তিনি বলেন এখন ধান কাটতে হবে না। এরই মধ্যে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর গত বৃহস্পতিবার কাশেমের ছেলে সুমন এসে আমাকে তাদের ধান কাটতে যেতে বলে। কিন্তু আমি অসুস্থতার কারণে ধান কাটতে যেতে রাজি হইনি। এই কারণে সুমন আমাকে মারধর করলে আমি কালাম মেম্বারের ছেলে যুবলীগের নেতা জুয়েলের কাছে যাই বিচারের জন্য। কিন্তু তিনি বিচার না করে উল্টো আমাকে হুমকি দেন। পরে আমি বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে জানালে তারা গিয়ে জুয়েলকে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করেন।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে জানানোর অপরাধে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জুয়েলের নির্দেশে ও তার বাবা কালাম মেম্বারের নেতৃত্বে একদল রামদা, চাপাতিসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এতে আমি, হারুনুর রশিদ, সফিকুল ইসলাম, মিজান, মহরম আলী, বৃদ্ধ আলী আশ্রাফ, আলী মিয়া এবং বাড়ির নারীরাসহ ১০-১২ জন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে লাকসামের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু টাকার অভাবে এখনো এই ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। আর এভাবে হামলা করেও তারা এখন বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করছে, আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবুল কালাম মেম্বার বলেন, আমি এবং আমার ছেলেদের বিরুদ্ধে করা এসব অভিযোগ মিথ্যা। আমি গিয়েছিলাম ঘটনা সমাধান করতে। কিন্তু তারা কেউ আমার কথা শুনেনি। আমি এই ঘটনায় জড়িত না।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেঝবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এই ঘটনার খবর পেয়ে ওইদিন সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে এখনো এই ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে শুনেছি ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন