৬ জুন, ২০২০ ২২:৪৩

লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলার ভাঙনে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি বিলীন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলার ভাঙনে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি বিলীন

লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত এক সপ্তাহে তীব্র ভাঙনে এরই মধ্যে সদর, আদিতমারি ও পাটগ্রাম উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। একই সঙ্গে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও গাছপালা।  হুমকির মধ্যে রয়েছে আরও শতাধিক পরিবারের বাড়ি। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ড, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ী এবং পাটগ্রামের শ্রীরামপুর, জোংড়া, বুড়িমারী,আদিতমারির মহিষখোচা ইউনিয়নের ২২টি পয়েন্টে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে।  এর মধ্যে গোকুন্ড, জোংড়া, কুলাঘাট ও মোগলহাটের অবস্থা উদ্বেগজনক। এ ৪টি ইউনিয়নের কিছু এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। 

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, বাঁধ নির্মাণের কাজ পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে না।  ফলে ভাঙনের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।  স্থায়ীভাবে নদী শাসন করতে না পারলে লালমনিরহাটের তিস্তা- ধরলা তীরের মানুষ কৃষি অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না। এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় পরিকল্পিতভাবে নদীশাসন এখন সময়ের দাবি। 

নদীর অনবরত ভাঙ্গনের শিকার হওয়া পরিবারের লোকজনের মধ্যে চলছে শুধু কান্না আর কান্না। প্রিয় বসতভিটাটিও শেষ পর্যন্ত নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ। জেলার তিস্তা নদী বেষ্ঠিত চর গোকুন্ডা, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, মহিষখোঁচা, গোবর্ধন, বালাপাড়াসহ ১০টি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অর্ধশতাধিক বাড়ীঘর  ভাঙ্গনের শিকার হয়ে চলে গেছে নদী গর্ভে। 
তাছাড়াও নদী গর্ভে চলে গেছে বিপুল পরিমানে আবাদি জমি, কয়েকটি বাঁশঝাড়, ফলের বাগান ও স্থাপনা। অনেকে ভাঙনের ভয়ে বসতভিটা থেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্রে। কেটে নিয়ে যাচ্ছেন গাছপালা। নদীর আকস্মিক ভাঙ্গনের কারণে এসব গ্রামের লোকজন কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। অর্থাভাবে অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। 

গোকুন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন ভাঙ্গনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত এক সপ্তাহে তিস্তার ভাঙ্গনে তার ইউনিয়নের ১৭টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের নদী ভাঙ্গনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভাঙ্গন রোধে কাজ চলছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আটটি প্যাকেজে ৮ কোটি টাকার কাজ চলছে।  


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর