৭ জুলাই, ২০২০ ১৯:২৮

২২ বছর ধরে অজ্ঞাত রোগে ভুগছেন কালু

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:

২২ বছর ধরে অজ্ঞাত রোগে ভুগছেন কালু

মোশারফ হোসেন কালু

টানা ২২ বছর ধরে অজ্ঞাত রোগে ভুগছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের পারচৌকা রাঘববাটি গ্রামের মহসিনের ছেলে মোশারফ হোসেন কালু। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। ফলে যত দিন যাচ্ছে তার অসুখ বৃদ্ধি পেয়ে বট গাছের জটের মত হাতের নিচে ঝুঁলতেই থাকছে। ভীষণ কষ্টে দিন কাটছে তার। দিনে দিনে শারীরিক শক্তি হারাচ্ছেন তিনি। 

জীবন আরো কঠিন হয়ে উঠছে। জমিজমা নেই বললেই চলে। শুধু বসত ভিটাতে মাত্র ৯ কাঠা জমি আছে। মা অতিকষ্টে কিনেছিল জমিটুকু। যা দিয়ে তার ও তার দুই বিধবা বোনের সংসার চলছে অতি কষ্টে। চারটি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে কালুর। চার মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তারা গার্মেন্টেসে চাকুরি করে। আর ছেলেটি দিনমজুর। তাদের সহযোগিতায় কোন রকমে বেঁচে আছেন তিনি। 

মোশারফ হোসেন কালু জানান, ২২ বছর আগে প্রথমে শরীরের ডানহাতের কনুইতে দানা আকারে ফোসকা উঠেছিল। আস্তে আস্তে তা বড় হয়ে উঠে। অভাবের তাড়নায় ভাল চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়েছি। এতে কোন ফল হয়নি। কয়েক বছর আগে এক এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করিয়েছিলেন তিনি। ডাক্তার তাকে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু মোটা অংকের টাকা খরচ হবে তাই অপারেশন করাতে পারেনি তিনি। বর্তমানে অবস্থা খুবই খারাপের দিকে। হাতের মাংসগুলো নীচে ঝুঁলে গেছে। লোক লজ্জার ভয়ে বাইরে যেতেও পারেন না তিনি। 

মোশারফ হোসেন কালুর দুই বিধবা বোন নাজিরা বেগম ও সোনা বেগম জানান, আমরা ছোট থেকে আমার ভাইকে এ অসুখে ভুগতে দেখে আসছি। সে খুব কষ্টে আছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস বলেন, ঘটনাটি আমাদের জানা ছিল না। জরুরী ভিত্তিতে যোগাযোগ করে তাকে চিকিৎসা কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে সাহায্য করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি তার জন্য প্রতিবন্ধী কার্ড ও ভাতার ব্যবস্থাও করা হবে। 

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাক্তার জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, এ রোগটির নাম হলো নিউরো ফাইব্রো মেটাসিস। এটি একটি অজ্ঞাত রোগ বলা যায়। এটির কোন চিকিৎসা নেই। তবে নতুন অবস্থায় হলে কিছুটা চিকিৎসা করা যেতো। অর্থাৎ তখন অপারেশন করা যেতো। বর্তমানে অপারেশন করলে রোগী মারা যেতে পারে। তাই এখন আর ওই পথে না যাওয়ায় ভাল। তিনি আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এটিই প্রথম নিউরো ফাইব্রো মেটাসিস রোগী।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর