১৪ জুলাই, ২০২০ ১৯:৫০

কুড়িগ্রামে বন্যায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে বন্যায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী

কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি হয়েছে। নদ-নদী তীরের সাড়ে ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচর নিমজ্জিত হয়ে পড়ায় পানি বন্দী হয়ে পড়েছে সেখানকার আড়াই লক্ষাধিক মানুষ। জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের ৫৬টি ইউনিয়নের ৪ শতাধিক গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে। 

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ৯৫  সেন্টিমিটার ওপর এবং দুধকুমর নদীর নুনখাওয়া পয়েন্টে ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা নদীর পানি সামান্য কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা-উপজেলা শহরের সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব মানুষ।

খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। উঁচু রাস্তা, বাঁধ, স্কুল ঘরে ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তবে নৌকার অভাবে অনেকেই নিরাপদ স্থানে যেতে পারছেনা। ধরলা নদীর পানির প্রবল চাপে সদর উপজেলার সারডোবে একটি বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি ও গাছপালা বিধ্বস্ত  হয়েছে এবং সব ভেসে যাচ্ছে।

বাড়িঘর তলিয়ে গিয়ে প্রথম দফা বন্যায় কিছুটা ক্ষতি হলেও এবার কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারছেন বন্যা কবলিতরা। দুর্গম চরাঞ্চলে ত্রাণ কেউই পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। অপ্রতুল ত্রাণ সকলের ভাগ্যে জুটছেনা বলে অভিযোগ বন্যার্তদের। নিজেদের সহায় সম্বল বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ায় তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগলসহ গবাদি পশু ও ঘরের ধান চালসহ অনেক জিনিস বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে। কাঁচা সড়ক ছাড়াও সদর উপজেলার মধ্যকুমরপুর হয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা শহর যাওয়ার পাকা রাস্তা এখন পানির নিচে। ফলে যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। 

জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, গত কয়েকদিন আগের বন্যায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফা বন্যায় এ পর্যন্ত ৮শ হেক্টর জমির ফসল নতুন করে নষ্ট হয়েছে। জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, ইতিমধ্যে জেলায় ২ হাজারের বেশি পুকুর ও জলাশয়ের মাছ বের হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৪৩০ মণ মাছ বের হয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার পোনা ও চাষ করা মাছ ক্ষতি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। ৪০০ মে. টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর