১৬ জুলাই, ২০২০ ১০:০৬

রাজবাড়ীতে কমছে পাটের আবাদ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীতে কমছে পাটের আবাদ

উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম না পাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কৃষি বিভাগের অসহযোগিতার কারণে রাজবাড়ীতে অব্যাহতভাবে কমেছে সোনালী আশ হিসাবেখ্যাত পাটের আবাদ।

রাজবাড়ী কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রাজবাড়ীতে ৪৯ হাজার ৬০০হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হলেও ১৮-১৯ অর্থবছরে পাটের দাঁড়ায় ৪৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর, ১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়। 

২০২০-২০২১ অর্থবছরে রাজবাড়ীতে সেই আবাদ এসে দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। গত তিন বছরে রাজবাড়ীতে পাটের আবাদ কমেছে ৩হাজার ১১৫হেক্টর জমিতে।

রাজবাড়ীর বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর অনেক আশা নিয়ে কৃষকেরা পাটের আবাদ শুরু করলেও ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে অনেক পাটক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে নিচু অঞ্চলের জমিতে পানি জমে থাকার কারণে অধিকাংশ জমির পাটের ফলন সেভাবে হয়নি। বর্তমানে রাজবাড়ীর মাঠে পাট কাটা থেকে শুরু করে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পাড় করছে জেলার কৃষকেরা। 

অব্যাহতভাবে পাটের আবাদ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে রাজবাড়ীর কৃষকেরা জানান, দিন দিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু সেই তুলনায় পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এবছর এক একর জমিতে পাটের বীজ, সেচ, পরিচর্যা, পাটকাটা এবং ধোয়া বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ৪০হাজার টাকা। আম্ফানের কারণে একর প্রতি গড়ে ১২ মণ করে উৎপাদন কমে এ বছর উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৫ মণ করে। বর্তমানে পাটের বাজার মূল্য ১৯০০টাকা। সেক্ষেত্রে প্রতি একরে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে ১১ হাজার টাকার বেশি।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি অঞ্চলের কৃষক প্রাণেশ বিশ্বাস বলেন, কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠ পর্যায়ে না এসে সরকারের কাছে পাটের উৎপাদন, উৎপাদন খরচ এবং বাজার মূল্য দেখায়। এবছর মাঠের অর্ধেকের বেশি পাট নষ্ট হলেও দাম কিন্তু বৃদ্ধি পায়নি। 

তিনি আরও বলেন, রাজবাড়ীতে বেসরকারি ভাবে পরিচালিত বড় ধরনের চারটি পাটকল থাকলেও কৃষকেরা পাটের দাম কম পাচ্ছে। বাজারে বাজারে সিন্ডিকেট রয়েছে বলে দাবি করেন এ কৃষক। 

আজ বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস বলেন, আউশের আবাদ বৃদ্ধি এবং ন্যায্য দাম না পাওয়ার  কারণে পাটের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে দাবি করেন রাজবাড়ী কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক। 

এ বছর ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে পাটের আবাদ এবং ফলন কম হয়েছে। পাটের আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করবে বলে জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা। 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসির

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর