৯ আগস্ট, ২০২০ ১৩:৪৪

টাঙ্গাইলে ১১ দফা দাবিতে আদিবাসী সংগঠনগুলোর সংবাদ সম্মেলন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলে ১১ দফা দাবিতে আদিবাসী সংগঠনগুলোর সংবাদ সম্মেলন

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন ও ১১ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ আদিবাসী সংগঠনগুলো। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার আদিবাসীদের এসব দাবি পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানান আদিবাসী নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আচিক মিচিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সুলেখা ম্রং। সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের আদিবাসীরা ভাল নেই। অত্যন্ত খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের আদিবাসীরা। বাড়িতে খাবার নাই, বাইরে কাজ নাই, শহরে চাকরি নাই। এমনকি সরকার তথা, অন্য কোন সংস্থার সহায়তাও পর্যাপ্ত নাই। ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে হাজার হাজার আদিবাসী নারী-পুরুষ আজ কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে আছে। বিশেষ করে বিউটি পার্লার, পোশাক শিল্প, বিভিন্ন কোম্পানী, সরকারি-বেসরকারি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে চাকরি হারিয়ে অভাব-অনতনে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার এ বিষয়ে মহান উদ্যোগ নিলেও আদিবাসীদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমানে সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, মধুপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, পীরগাছা থাংনা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিকেন মৃ, আইনজীবী এমএ করিম মিঞা, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার প্রতিনিধি গৌতম চন্দ্র চন্দসহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলনে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের সংবিধানে আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা, আদিবাসীদের জন্য জাতীয় সংসদে শতকরা ৫ ভাগ অর্থাৎ ১৫টি সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ দেয়া, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনসহ একজন আদিবাসীকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা, সমতলের আদিবাসীদের ভুমির অধিকার রক্ষার জন্য আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা, মহান সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সমতল আদিবাসী নারীদের মনোনয়ন প্রদান করা, আইএলও কনভেশন নং ১০৭ এর আলোকে আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন পূর্বক তা বাস্তবায়ন করা, শিক্ষা ও সরকারি চাকরির সকল স্তরে আদিবাসীদের জন্য শতকরা ৫ ভাগ কোটা বরাদ্দ বহাল রাখা, আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায় স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে) ও প্রশাসনের বিভিন্ন কমিটিতে আদিবাসী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, আদিবাসীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বন মামলা ও অন্যান্য হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা এবং ‘বন আইন ২০১৯’ সংশোধনসহ নতুন করে মিথ্যা বন মামলা দায়ের করা থেকে বিরত থাকা ও আদিবাসীদের বংশানুক্রমিক স্বত্ব দখলীয় ও সরকারী খাস জমিসমূহের আইনগত স্বীকৃতি প্রদান করা, সরকারিভাবে আদিবাসীদের পৃথক আদম শুমারী করে আদিবাসী জনসংখ্যার প্রকৃত তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা, আদিবাসী এলাকায় সরকারী উন্নয়ন প্রকল্প তৈরির পূর্বে আদিবাসীদের সঙ্গে সুস্পষ্ট আলোচনা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা এবং বর্তমানে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী পরিবারসমূহের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রণোদনা প্রদান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।


বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর