২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৫:৪১

দুর্ভোগে দিশেহারা বন্যা কবলিতরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

দুর্ভোগে দিশেহারা বন্যা কবলিতরা

দফায় দফায় বন্যা-বৃষ্টি ও ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বন্যা কবলিতরা। এমনিতেই টানা আড়াইমাসের বন্যায় ঘর-বাড়ি আসবাস পত্র নস্ট হয়ে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে। তারমধ্যে আবার পানি বাড়ায় ঘরবাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে বন্যা কবলিতরা। করোনা থেকে চলতি বন্যায় কাজের সুযোগ না থাকায় অনেক পরিবার অর্ধাহারে অনাহারে দিনযাপন করছে। নতুন করে ফসল নষ্টের আশঙ্কায় ভুগছে কৃষকরা। অন্যদিকে, বন্যার সাথে ভাঙ্গন এসব এলাকার বাসিন্দাদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বিগত তিনমাসে ভাঙনের শিকার হাজার হাজার পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে বাঁধে, খোলা আকাশের নিচে ঝুপড়ি তুলে মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছে। আর ভাঙনের মুখে থাকা নদীতীরের মানুষগুলোর নির্ঘুম রাত কাটছে।

জানা যায়, এ বছর দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে যমুনার অরক্ষিত অংশগুলো দফায় দফায় ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। দীর্ঘ তিন মাসে প্রায় এক হাজারের বেশি বসতভিটা সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একই সাথে ফসলি জমি, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে এক সময়ের সম্পদশালী মানুষ মুহূর্তেই রাস্তার ফকির হয়ে গেছে। বর্তমানে চৌহালী, শাহজাদপুর, এনায়েতপুর, সদর উপজেলার সিমলাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও বন্যার কারণে বসতভিটা তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে তাঁত কারখানা, মৎস্য খামারের। এসকল ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ নতুন করে আবার পানি বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষের মধ্যে চরম খাদ্য, ওষুধ ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়া ও হাত পায়ে ঘাসহ নানা রোগ। অনেক বসতভিটার চারপাশে পানি থাকায় শিশু-বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বন্দী জীবযাপন করছে মানুষ।
সদর উপজেলার শিমলা গ্রামের বিধবা হাফিজা খাতুন জানান, ভাইয়ের জায়গায় বসতভিটা করেছিলাম। কিন্তু নদীতে সব বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। সেখান থেকেই সরে যেতে বলছে। একটু টুকরো জায়গা নেই যেখানে ঘর তুলবো। 
আরেক বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, জীবন জীবিকা চালানোর শেষ সম্বল ফসলি যেটুকু জমি ছিল তাও নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন কাজ কর্ম নেই। খেয়ে না খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনযাপন করছি। 
সিমলা এলাকার ভাঙ্গনের হুমকিতে থাকা বাসিন্দারা বলছেন, আমরা ত্রাণ চাই না। সরকারের কাছে একটাই দাবি যা যাবার বিলীন হয়ে গেছে। বাকিটুকু যাতে বিলীন হয়ে না যায় সেটুকু রক্ষায় যেন সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে যমুনার তীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে। পানির প্রবল স্রোত ও ঘূর্নাবর্তের পানির কারণে আকস্মিকভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়। অরক্ষিত অংশগুলো যাতে না ভাঙ্গে সে জন্য স্থায়ী বাঁধের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। পাস হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর