দুদিন পর মঙ্গলবার ভোর থেকে আবারও ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের কারণে লালমনিরহাটের সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে চরাঞ্চলের লাখো মানুষ।
গত দুদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে তিস্তা ধরলার পানি কমে বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও পানি বাড়ায় বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। পানিতে তলিয়ে রয়েছে দুর্গত এলাকার রাস্তা-ঘাট ও ফসলের জমি। উজানের পানির সঙ্গে আসা বালিতে ঢেকে গেছে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোর ফসলের খেত। অনেকের ঘরে খাবার থাকলেও রান্না করতে পারছেন না, ফলে, নদীপাড়ের মানুষের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। বন্যার পানিতে রাস্তা-ঘাট ডুবে থাকায় কলার ভেলাতে চলাচল করছে লালমনিরহাটের ৬৩ চরের মানুষ।
মঙ্গলবার বিকালে তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপর দিকে ধরলার পানি ১৫ সেন্টিমিটার দিয়ে নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাটসহ রংপুর অঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতির অবণতি হতে পারে।এদিকে পানি কমা ও বাড়ার কারণে লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলাপাড়ের অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগানসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা স্থাপনা। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে সরকারি রাস্তা ও অন্যের জমিতে। দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে বাস্তুহারা পরিবারের সংখ্যা।
লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের হরিণের চড়া গ্রামের রাবেয়া বেওয়া জানান, দুদিন তীব্র রোদ থাকায় পানি কিছুটা কমেছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের এলাকা থেকে এখনো পানি নামছে না। আমাদের বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি থাকায় সীমাহীন কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ