শিরোনাম
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৬:০১

উদ্বোধনের এক যুগ পার হলেও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পরিত্যক্ত!

নাটোর প্রতিনিধি

উদ্বোধনের এক যুগ পার হলেও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পরিত্যক্ত!

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৯ নম্বর তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। ইউনিয়নবাসীর সুযোগ-সুবিধার জন্য পরিষদের নতুন ভবন নির্মিত হলেও উদ্বোধন হয়েও পরিত্যক্ত পড়ে আছে। সেখানে দিনে বসবাস করে গরু-ছাগল। আর রাতে বসে নেশাখোরদের আড্ডা খানা। 

উদ্বোধনের পর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও ভবনের চেয়ারম্যান কক্ষ, সচিব কক্ষ, কৃষক তথ্য পরামর্শ কেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ডিজিটাল সেন্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ কক্ষগুলো দীর্ঘ এক যুগ ধরে তালাবদ্ধ থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অত্র ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। 

ভবনটিতে জমেছে ময়লার স্তুপ। আর সন্ধ্যা হলেই বসে নেশাখোরদের আড্ডা। এলাকাবাসীর দাবি ভবনটি চালু করে ইউনিয়নবাসীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া হোক। স্থানীয় জনসাধারণ উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেছেন। 

জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ১০ জানুয়ারি উপজেলার ৯ নম্বর সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের কিছু এলাকা নিয়ে সিংড়া পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। আর বাকি অংশ নিয়ে ৯ নম্বর তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়। পৌরসভা ঘোষণার কারণে সাবেক সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি সিংড়া পৌরসভার আওতায় চলে যায়। পরে ২০০৫ সালে তাজপুর এলাকায় এলজিইডির বাস্তবায়নে ৯ নম্বর তাজপুর ইউপি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
২০০৭ সালে ৫ এপ্রিল নবনির্মিত ওই ভবনের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক এসএম এহসান কবীর।
 
কিন্তু উদ্বোধনের পর দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও ওই ভবনের কার্যক্রম চালু হয়নি। বরং পৌর শহরের সেই সাবেক পুরাতন ইউপি ভবনের একটি কক্ষ নিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অত্র ইউনিয়নের জনসাধারণ। 

নতুন ভবন তালাবদ্ধ থাকায় উপকারভোগী ভিজিডি, ভিজিএফ কার্ডধারীদের অতিরিক্ত টাকা ও সময় ব্যয় করে সিংড়া পৌর শহরের যেতে হচ্ছে।

তাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, জন্মসনদ কিংবা কোনো সনদপত্র প্রয়োজন হলে তাদের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সিংড়া পৌর শহরে যেতে হয়।

স্থানীয়রা জানান,  ডিজিটাল যুগে ভবনে ইন্টারনেট সংযোগ, তথ্য সেবা কেন্দ্র ও কৃষক তথ্য সেবা কেন্দ্র থাকলেও তালাবদ্ধ থাকায় এলাকাবাসী কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

স্থানীয় ভ্যান চালক আসলাম ও আব্দুর রহিম বলেন, তাজপুর স্কুল ও বাজারের পাশে এত বড় অট্টালিকা অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। অথচ আমরা ইউনিয়নবাসী সকল সেবা থেকে বঞ্চিত। 

স্থানীয় তাজপুর বাজারের ব্যবসায়ী আলম হোসেন বলেন, সন্ধ্যা হলেই ভবনে নেশাখোরদের আড্ডা বসে। কয়েকদিন আগে এই ভবন থেকে কয়েকজন নেশাখোরকে আটকও করেছে পুলিশ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এই ভবনের কার্যক্রম চালু করা হলে জনগণের যেমন সেবা পেতে সুবিধা হবে, তেমনি এলাকার উন্নয়ন হবে। তবে ভবন কেন চালু হচ্ছে না সেটা চেয়ারম্যান ভালো জানেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন বলেন, তিনি শহরের সাবেক ভবনেই বসেন। তবে নতুন ভবনটিতে মাঝে মাঝে সালিস করে থাকেন বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নজরে আসার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফোন করে জানতে পারি ওই ভবনে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কয়েকদফা চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত নির্দিষ্ট ভবনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর