২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৫:২১

টানা বৃষ্টিতে আশুগঞ্জের চাতালে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ধান

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

টানা বৃষ্টিতে আশুগঞ্জের চাতালে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ধান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক চাতাল কলে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের সিদ্ধ ও হাউজে ভিজিয়ে রাখা ধান। আর এসব ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিকরা।

পরবর্তী সময়ে রোদে শুকিয়ে এসব ধান দিয়ে চাল উৎপাদন করা হলে চালের মান যেমন নষ্ট হবে, তেমনি দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে বিক্রি করতে হবে অর্ধেক দামে।

আশুগঞ্জ উপজেলায় ছোট বড় ৩ শতাধিক চাতালকল রয়েছে। দেশের এই চাল উৎপাদন কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার টন চাল সরবরাহ করা হয়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ওইসব মোকামে চাল সরবরাহ সম্ভব হবে না। 

এদিকে, এসব চাতালে কর্মরত আছে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক। বর্তমানে টানা বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় মজুরি পাচ্ছেন না তারা। ধার-দেনা করে কোনো রকমে দিনযাপন করছেন। 

চাতাল মালিক মেহেদি শিকদার জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে হাউজে ভিজিয়ে রাখা ধান ও মাঠে সিদ্ধ ধান শুকাতে না পারায় তার ১ লাখ টাকা ক্ষতি হবে। কারণ, এই ধান চাউলে উৎপাদন করেও ভালো দাম পাওয়া যাবে না।

অন্যান্য চাতাল মালিকরা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে ভেজানো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া খোলা মাঠে টুপরি দিয়ে রাখা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাতাল মালিকরা। এতে করে অধিকাংশ চাতাল কলের হাজার হাজার মণ সিদ্ধ ধান নষ্ট হয়ে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুণতে হচ্ছে।

চাতালকলে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় গত ৪ দিন ধরে তারা বেকার বসে আছেন। এতে করে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

আশুগঞ্জ উপজেলা অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির জোবায়ের হায়দার বুলু বলেন, এমনিতেই মোকামে ধান সংকটে ধানের মূল্য বেশি। তার মধ্যে আবার বৃষ্টি। ধান সংকট ও  বৃষ্টি কারণে আশুগঞ্জ মোকামে ধানের আমদানি এমনিতেই কম।

বর্তমানে উপজেলার শতাধিক চাতালকলে প্রায় অর্ধলাখ টন ধান সিদ্ধ করে রাখা আছে। বাকি চাতালগুলোতে অর্ধলাখ টন ধান রয়েছে হাউজে ভেজানো। টানা বৃষ্টির কারণে এসব ধান শুকানো যাচ্ছে না। এতে করে মিল মালিকদের আর্থিক ক্ষতি হবে। 

উল্লেখ্য, বৃহত্তর হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আশুগঞ্জ মোকামে প্রতিদিনই আসছে হাজার হাজার মণ ধান। আর এসব ধান স্থানীয় রাইস মিলে প্রক্রিয়াজাত করে চালে পরিণত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌপথে সরবরাহ করে এসব এলাকার চালের চাহিদা পূরণ করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর