২০ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:২১

আলফাডাঙ্গায় ‘ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

আলফাডাঙ্গায় ‘ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন

ইরি ধানের জাত ‘ফাতেমা ধানের’ চাষ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলাতেও শুরু হয়েছে। আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের তরুণ যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ব্যতিক্রম এই ধান চাষ করেছেন। জমিতে বাম্পার ফলন ফলবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ‘ফাতেমা’ জাতের ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। ১০-১২ দিন পর থেকেই ধান কাটা শুরু হবে। 

জানা যায়, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কথামতো ছেলে লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ধান চাষ করে তিনটি শীষ খুঁজে পান। পরে সেই শীষের ধান বুনে পান দুই কেজি বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন। যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন বিঘা প্রতি ১৮ মণের বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না।

পরবর্তীতে কৃষক লেবুয়াতের মা এই ধানের উদ্ভাবক হওয়ায় তারা মায়ের নামানুসারে এই ধান ‘ফাতেমা ধান’ হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পরিচিতি পায়। এ ধানের গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যে কোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। 

প্রতি গোছে একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ৮-১০টিতে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি ধান গাছ ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা। একেকটি ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬-৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা ১ হাজার থেকে ১২০০ টি। যার ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম। ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিপ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। ধানগাছের পাতা চওড়া দেড় ইঞ্চি। 

এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং অনেক বেশি শক্ত। তাই এই ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোন আশঙ্কা নেই। ফাতেমা ধান একরপ্রতি ফলন হয় প্রায় ১৩০ মণ। তাই অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।

এ ব্যাপারে কৃষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করার পর বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করি। এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি। এতে সবকিছু মিলে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশাবাদী এ জমিতে প্রায় ৯৫-১০০ মণ ধান হবে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা জানান, বাগেরহাটের কৃষক কর্তৃক উদ্ভাবিত ফাতেমা জাতের ধানের রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। এ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

সর্বশেষ খবর