১৬ মে, ২০২১ ১৭:৫৯

বন্ধ রয়েছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ:

বন্ধ রয়েছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ নওগাঁর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। এটি নওগাঁর বদলগাছীর পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত। যা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে অনেক আগে। করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল এটি। আবার নতুন করে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি বছরের গত ২ এপ্রিল থেকে নতুন করে বন্ধ ঘোষণা করা হয় এই পর্যটন কেন্দ্রটি। বর্তমানে পর্যটক শূন্য স্থাপনাটি। তবে ঈদকে ঘিরে খোলা ভেবে অনেক দর্শনার্থী এসে ঘুরে যাচ্ছেন। ভিড় করছেন প্রধান ফটকে। আবার প্রাচীরের বাহির থেকে দেখছেন, আবার অনেকে ছবিও তুলছেন। 

জানা যায়, ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনাটি আবিষ্কার করেন। ঐতিহাসিক এই বিহারের সব স্থাপনাই পোড়া ইট ও কাঁদামাটির তৈরি। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থানের স্বীকৃতি প্রদান করেন। এটি মূলত পাল রাজ্যত্বের রাজধানী ও সেই সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখানে সে সময় ভিক্ষুরা পড়ালেখা করতো। নওগাঁ শহর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। সারাবছর দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটলেও করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে এই পুরাকীর্তিটি। প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড় ছিল কিন্তু এই ঈদে পাহাড়পুরটি ছিল দর্শকশূন্য। অনেক পর্যটকরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। অপরদিকে এই পাহাড়পুরকে ঘিরে শত শত মানুষ দোকান, হোটেল ও ভিতরে ফেরি করে পণ্য বিক্রি করে জীবন ধারন করতো কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত এই পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক না আসায় এই সব নিম্ন আয়ের মানুষরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে রয়েছেন। এছাড়াও ঘরে আবদ্ধ থাকার পর ঈদে একটু বিনোদন নেওয়ার জন্য এসে পর্যটকরা পুরাকীর্তিটি না দেখেই ফিরে যাচ্ছেন। 

দর্শনার্থীরা বলেন, ভেবেছিলাম পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারটি খোলা আছে তাই দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকার পর সন্তানকে নিয়ে ঈদে এসেছিলাম একটু বিনোদন নেওয়ার জন্য কিন্তু বৌদ্ধবিহারটি বন্ধ তাই ঘুরে যেতে হচ্ছে। এদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, পাহাড়পুর বন্ধ থাকায় আমরা খুব কষ্টে আছি। আয় বন্ধ হয়ে গেছে। 

নওগাঁর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর যাদুঘরের সহকারী পরিচালক ফজলুর করিম বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার এই পর্যটন কেন্দ্রটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ঈদকে ঘিরে যেসব দর্শনার্থীরা আসছেন তাদেরকে বাহিরে থেকে বুঝিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। 

তবে শর্ত সাপেক্ষে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে থাকা ট্যুরিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক পর্যটক প্রবেশের মাধ্যমে এই বিশ্ব ঐতিহ্যটি খুলে দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এতে করে ঘরে বন্দি থাকা শিশু থেকে শুরু করে বড়রা যেমন একটু বিনোদন পাবেন তেমনিভাবে সরকার কিছুটা হলেও রাজস্ব পাবেন আর কর্মমুখর হবে এখানকার মানুষের জীবনপ্রণালী।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর