ফরিদপুরের বোয়ালমারীর চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামে দরিদ্র কৃষক আকমল শেখ হত্যা মামলার আসামিরা এখন রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আসামিরা মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকিসহ এলাকায় নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। এদিকে, হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন গ্রামবাসী। শনিবার (১২ জুন) বেলা ১১টার দিকে বাবুরবাজারে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে নিহতদের পরিবার-পরিজনদের সাথে সাধারণ গ্রামবাসীও অংশ নেন।
নিহতের স্বজনেরা জানান, গত ১৭ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক কাঙালি ভোজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আকমল শেখকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের ছেলে ইব্রাহিম শেখ এ ঘটনায় চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় তিনমাস অতিবাহিত হলেও কোনও আসামি আটক হয়নি। মামলাটি বর্তমানে ফরিদপুরের সিআইডি পুলিশ তদন্ত করছে।
চতুল ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাসমত শেখ বলেন, মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান জেলা যুবলীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এ পর্যন্ত গ্রামে কমপক্ষে দশজনকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।ফরিদা জামান নামে একজন মধ্যবয়সী নারী বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান লিটু শরীফের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা চলমান। তবু তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আকমল হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্ত স্বার্থে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের স্ত্রী লেকজান বলেন, পুলিশকে আসামিদের দেখিয়ে দেয়ার পরেও তাদের ধরেনি। আমাকে চেয়ারম্যান লিটু শরীফের ভাই বোর্ড অফিসে নিয়ে মামলা করার জন্য হুমকি দিয়ে বলে, তোর ছেলে (ইব্রাহিম) কেও দেখে রাখিস।
নিহতের সন্তান ও মামলার বাদি ইব্রাহিম শেখ বলেন, মামলার করার পরে চেয়ারম্যান নিজে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তারা আমাদের পরনের কাপড়ও রাখবে না বলে হুমকি দিচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুরের সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর আক্তারুজ্জামান মিনা মামলা তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারে অবহেলার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই করোনার সময়েও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে বাদির লোকজনকে নিয়ে অভিযান চালিয়েছে। এ পর্যন্ত মামলায় ১২ জনের মতো সাক্ষির জবানবন্দী নিয়েছি। আসামিদের গ্রেফতার করার পর চার্জশিট দাখিল সম্ভব হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত