পঞ্চগড়ের লাল সোনা খ্যাত মরিচ যাচ্ছে সারাদেশে। গত কয়েকবছর ধরে স্থানীয় জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের মরিচের ব্যাপক চাষ হচ্ছে এই জেলায়। অল্পখরচে ব্যাপক লাভ এবং মরিচ চাষ করে গ্রামীণ চাষিদের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন হওয়ার কারণে মরিচকে এই জেলায় লাল সোনা বলে সম্বোধন করা হয়। গতবছর টেপা পঁচা রোগের কারণে মরিচের উৎপাদন অর্ধেকে নেমে গেলেও চলতি বছরে মরিচের তেমন কোন রোগ না থাকায় মরিচের ভাল ব্যাপক ফলন হয়েছে । কিন্তু বিগত বছরের তুলনায় মরিচের ভালো দাম পাচ্ছে না কৃষক। করোনা পরিস্থিতিতে বাজার মন্দায় চাষিরা লোকসানের আশংকা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে দেশের সর্ব উত্তরের সমতল অঞ্চল পঞ্চগড়ে উৎপাদিত মরিচ কৃষি অর্থনীতিতে বড় জায়গা করে নিয়েছে। মরিচ চাষে লাভ ভালো পাওয়ায় অর্থকরী ফসল হিসেবে বেছে নিয়েছে কৃষকরা। ফলে দিন দিন জেলার ৫ উপজেলায় মরিচের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মরিচ চাষ করেও প্রতি বছর আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে জেলার চাষিরা। বেশ কয়েক বছর ধরে মরিচের আবাদ খারাপ হলেও এবার ফলন ভাল হয়েছে। আকার, বর্ণ এবং স্বাদে এখানকার মরিচের কদর অনেক বেশী। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় এখানকার মরিচ রপ্তানি হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে প্রকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে উৎপাদনে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে চাষিরা। তাই এবছর চাষিরা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মেনে ওষুধ প্রয়োগ এবং নিজস্ব ধ্যন ধারনা কাজে লাগিয়ে এ পর্যন্ত ভাল ফলন পেয়ে আসছে।
এ ক্ষেত্রে আবহাওয়া অনুকূল থাকাটাই ছিল কৃষকের বড় লাভ। তবে করোনা পরিস্থিতিতে মরিচের দাম কম থাকায় লোকসানের আশংকায় পড়েছে চাষিরা। করোনার কারণে বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে পারছে না। তাই মরিচের দেশব্যাপী সরবরাহ কমে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায় এবার পঞ্চগড়ে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে।আশা করা হচ্ছে এবছর প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদন হবে এই জেলায় যার মূল্য প্রায় সাড়ে চারশ কোটি টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান জানান, এই জেলার মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযোগী। বিশেষ করে আটোয়ারি উপজেলায় এবার ব্যাপক মরিচের আবাদ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে চাষিদের সবধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল