চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোড, কুমিল্লা রোড অনেক বছর ধরে বড় ধরনের সংস্কার না হওয়ায় যান চলাচল দূরে থাক, পায়ে হেঁটে চলাচল করাটাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত অবধি এই সড়কগুলোতে ছোট বড় প্রচুর যানবাহন চলাচল করে থাকে। পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কগুলো অর্থ বরাদ্দ ও বৃষ্টির কারণে মেরামত না করায়, সড়কগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। তবে পৌর মেয়র জানান, এই সড়কগুলো বৃষ্টি শেষ হলেই সংস্কার করা হবে।
সরে জমিনে দেখা যায়, ট্রাক রোডে ওয়ার্ড কাজী অফিস থেকে শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ মোড় ও কুমিল্লা রোডে বিপনীবাগ থেকে ঘোষপাড়া ও কালীবাড়ীর মোড়, পালবাজার পর্যন্ত সড়কে ছোট-বড় বহু গর্ত তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি বৃষ্টির ফলে ঐসব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গর্ত ও বৃষ্টিতে সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি জনসাধারণের পায়ে হেটে চলাচল করাটাও কঠিন হয়ে পরেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলম খান ও ফারুক হোসেন জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সড়ক দিয়ে শত শত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করতে গিয়ে যানবাহনের চাকা গর্তে পড়ে সড়কের ময়লা পানি পিষ্ট হয়ে ছিটকে শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ে কাঁদায় পোষাক নষ্ট হয়ে থাকে। আর রিকশা চালকরা জানান, বহু বছর এই সড়কগুলো মেরামত না করায়, ছোট বড় যানবাহন চলাচলের সময় আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। এমনকি দুর্ঘটনার শিকার পর্যন্ত হতে হয়। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও এই সড়কগুলোতে ভাড়া নিয়ে আসতে চায় না। এই সড়কগুলোতে মালবাহী ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস থেকে প্রতিদিন প্রতিটি গাড়ি থেকেই পৌর টোল আদায় করা হয়।
এছাড়া ট্রাকঘাট থেকে ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ট্রাক রোড দিয়ে পরিবহন করে থাকে। আর কুমিল্লা রোড দিয়ে শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মাদ্রাসা, পৌরসভা ও লঞ্চ ঘাটে যাতায়াত করে থাকে। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ এই দু’টি সড়ক মজুবতভাবে দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
কাউন্সিলর মো: ইউনুছ শোয়েব ও চান মিয়া মাঝি জানান, আমরা নিজেরাই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকি। পৌরসভার পক্ষ থেকে সাধ্যমত গর্তগুলো ইটের কণা দিয়ে মেরামত করে জনসাধারণের চলাচলে সচল রাখার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। এই সড়কগুলো টেকসই সংস্কারে প্রচুর অর্থ বরাদ্ধের প্রয়োজন। অর্থ বরাদ্ধ পেলে ও বৃষ্টিপাত কমলেই সড়কগুলোর সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সামসুদ্দোহা বলেন, ট্রাক রোডের ফান্ড পাওয়া সাপেক্ষে সংস্কার কাজ করা হবে। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি আরসিসি সংস্কার করতে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা প্রয়োজন। আর কুমিল্লা রোডটি ১৬শ’ মিটার দৈর্ঘ্যের (জিওবি) কার্পেটিং কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও, সড়কটি প্রশস্তকরণের কাজ চলমান ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কার্পেটিং এর কাজটি একটু বিলম্বিত হয়ে গেছে। বর্ষার পরেই কার্পেটিং কাজ করা হবে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো: জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, পৌরসভার ট্রাক রোড দিয়ে বড় বড় মালবাহী ট্রাক-ভাউচার চলাচল করার কারণে মহাসড়কের আদলে ঢালাই দিয়ে এই কাজটি করতে হবে। এই কাজে সেখানে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মহোদয় একটা বড় অংক দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই অর্থ হাতে পেলে বাকিটুকু পৌরসভার নিজস্ব ফান্ড থেকে নিয়ে ট্রাক রোডের কাজটি করার ইচ্ছা রয়েছে। ইতোমধ্যে শহরের কয়েকটি সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ করা হয়েছে। এখন কুমিল্লা রোডসহ অন্যান্য সড়কগুলোর সংস্কার কাজ শুরু করবো। কুমিল্লা রোডের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ, এই সড়কটি প্রশস্তকরণের কাজ চলমান থাকায় কার্পেটিং কাজ শুরু করা যায়নি। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে পৌরসভার অবশিষ্ট সড়কগুলোর কাজও সম্পন্ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল