চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা, মহানন্দা ও পূর্ণভবা নদীর পানি বাড়ছে। উজানের ঢল আর বর্ষণে পানি বাড়ছে এসব নদীর। গত কয়েক দিনের মধ্যে মহানন্দা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। তবে নদীগুলোতে পানি এখনও বিপদসীমার নিচেই থাকলেও পদ্মা পাড়ের কিছু কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলার পদ্মা নদীতে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার। বর্তমানে এ নদীতে পানি রয়েছে ২০ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। আগের ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে দশমিক ২১ সেন্টিমিটার। যা নদীর ধার্য বিপদসীমার ১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে মহানন্দা নদীর বিপদসীমার মাত্রা ধরা হয়েছে ২১ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। নদীটিতে বর্তমানে পানি আছে ১৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানন্দায় পানি বেড়েছে ১৩ সেন্টিমিটার।
এদিকে গত কয়েকদিনে মহানন্দা নদীতে দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পূণর্ভবা নদীতে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ২১ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। বতর্মানে নদীতে পানি রয়েছে ১৭ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার। আগের ২৪ ঘণ্টায় নদীটিতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র দশমিক শূণ্য ৩ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৩ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি ফলে পদ্মা নদীতে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা ঈদগাহ থেকে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ রশিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের নামোজগন্নাথপুর এলাকার পন্ডিতপাড়া থেকে একই এলাকার দোভাগী পর্যন্ত ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্ট ভাঙনে বিলিন হয়েছে কয়েক’শ বিঘা ফসলি জমি। ফলে পদ্মা তীরবর্তী নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ভাঙনের ঝুঁকিতে নিরপাদ দুরত্বে সরে যাচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন ধরে জেলার নদীগুলোতে পানি বাড়ছে। উজানের ঢল আর বর্ষণে কিছু কিছু এলাকার বিলগুলো পানিতে ভর্তি হয়ে গেছে। তবে এখনও নদীর পানি বিপদসীমার নিচেই আছে। কিন্তু নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিবগঞ্জের পাকা, দুর্লভপুর ও মনাকষা ইউনিয়নের কিছু এলাকায় পুকুর ডুবে যাওয়ার কথা শোনা গেছে। তবে ব্যাপক হারে ক্ষতি হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, চলতি বছরে পুকুর ভেসে মৎস্য চাষি ক্ষতিগস্ত হয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। অপরদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, উজানের ঢল আর বর্ষায় এখন পর্যন্ত ফসলি জমি ডুবে গিয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। তবে জেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা ডুবে থাকতে পারে, কিন্তু সেসব জমিতে সেরকম ফসল আবাদ হয় না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল