চাঁদপুরের আড়ৎগুলোতে ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পেলেও দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। ক্রেতারা বলছে, দূর থেকে ইলিশের দাম কম শুনা গেলও বাস্তবে ঠিক উল্টো। আর আড়ৎদার বলছে, দীর্ঘদিন পর ঘাটে ইলিশ আসলেও আমদানি আরো বৃদ্ধিতে পূর্বের লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তবে ইলিশের প্রজনন মৌসুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে প্রচুর ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়বে। এতে ইলিশের দামও ক্রেতাদের নাগালে আসবে বলে মনে করেন মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। জেলা মৎস্য অফিসে তথ্য মতে চাঁদপুরে ছোট বড় দেড় শতাধিক মৎস্য আড়ৎ রয়েছে।
বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম। ইতোমধ্যে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ইলিশের আমদানী বৃদ্ধি পেয়েছে। চাঁদপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের আমদানি গত ৩/৪ দিনে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাঁদপুরে সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বড় স্টেশন পাইকারি আড়ৎ। এখানে প্রতিদিন হাতিয়া, সন্দীপ, চর আলেকজান্ডার, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালীসহ সাগর উপকূলীয় অঞ্চল থেকে জেলেরা দাম বেশি পাওয়ার আশায় ইলিশ নিয়ে আসে। এই ঘাট ঘুরে ইলিশ সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা সহ বড় বড় বাজারগুলোতে চলে যায়। প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার মন ইলিশ এঘাটে আমদানি হচ্ছে। ইলিশের আমদানি বাড়লেও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেটারদের মধ্যে রয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। তবে চাঁদপুরে স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ তুলনামূলকভাবে অনেক কম, দাম বেশি।
আড়ৎ ব্যবসায়ী হাজী আ: সাত্তার খান বলেন, দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ইলিশের আমদানি পূবের্র চাইতে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমদানি আরো বাড়লে পূর্বের লোকসান কিছুটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। বর্তমানে পাইকারি দেড় কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ’ থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে, ১ কেজি থেকে ১৩শ’ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা কেজি দরে, ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেজি দরে, আর ৫শ’ থেকে ৬শ’ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা কেজি দরে। তবে চাঁদপুরে স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশের দাম আকার ভেদে প্রতি কেজি দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, টানা বৃষ্টিপাত ও নদীতে স্রোত বাড়ার ফলে চাঁদপুরসহ বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ইলিশের আমদানী বৃদ্ধি পেলেও দাম রয়েছে চড়া। তবে প্রজনন মৌসুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়বে। আশা করছি ইলিশের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন