কুষ্টিয়ার খোকসায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কথা বলে ফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত বছরের পুরাতন একটি কড়ই গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোন প্রকার টেন্ডার বা নিলাম ছাড়াই রবিবার সকালে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী গাছটি কাটতে শুরু করেন। তার লোকেরা অর্ধ লাখ টাকা দামের শতবর্ষী গাছটি কেটে নিয়ে যায়। এ গাছ বিক্রির জন্য শিক্ষা বিভাগ বা উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নেননি প্রধান শিক্ষক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শত বছরের পুরাতন ফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের তত্বাবধায়নে নিয়োগ প্রাপ্ত বকুল এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সুযোগে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার পাল ও আতিয়ার রহমান পরস্পর যোগাসাজশে পুরাতন কড়ই গাছটি বিক্রি করে দেন। স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী গাছটি খরিদ করেন। রবিবার সকালে ওই ব্যবসায়ী গাছটি কাটতে শুরু করেন। বিকাল পর্যন্ত গাছ কেটে কাঠের গুড়ি গুলো সরিয়ে ফেলেন।
বিদ্যালয় থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাথাল দৌড় কারিগর পাড়ায় কাঠ ব্যবসায়ী ইউসুফ আলীর বাড়ির পাশে কাঠের গুড়িগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে রিকসা ভ্যানে রাখা গাছের ছবি তুলতে গেলে ওই ব্যবসায়ী ও তার লোকেরা বাধা দেয়।
বিদ্যালয় সংলগ্ন ফুলবাড়ী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুস সাদেক গাছটির অবস্থান নিশ্চিত করে জানান, কয়েক বছর আগে গাছটি মারা যায়। এর পর থেকে আর কেউ গাছের একটি ডালও কাটেনি। নাস্তা বেলার (সকালের খাবারের সময়) সময় কয়েকজন লোক গাছটি কাটা শুরু করে। বিকাল পর্যন্ত তারা গাছ কেটে ভ্যানে করে নিয়েও যায়। গাছ কাটার সময় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
কাঠ ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী জানান, এই কাঠের গুড়িগুলো অন্য জায়গা থেকে কেটে আনা। তিনি স্কুলের গাছ খরিদ করেননি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার পাল বলেন, মরা গাছের জন্য স্কুুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। তাই তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে বলে গাছটি কাটিয়েছেন। গাছটি তার স্কুলের নয়, সড়কের জমিতে গাছটি ছিল।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হুসাইন মোহম্মদ বেলাল জানান, বিদ্যালয়ের গাছ কেটে বিক্রির বিষয়ে তিনি শুনেছেন। একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আরো কিছু গাছ কাটার জন্য ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষা অফিসে রেজুলেশন জমা দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, যে কোনো সরকারী প্রতিষ্ঠানের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বিক্রির জন্য উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। সেই কমিটি ওই বিদ্যালয়ের গাছ কাটার অনুমোদন দেয়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল