২৪ মে, ২০২৪ ১৮:০৯

মহাসড়ক যেন ময়লার ভাগাড়

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

মহাসড়ক যেন ময়লার ভাগাড়

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশে ৩টি স্থানে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এতে করে মহাসড়ক পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে এলাকাবাসী ও পথচারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক এবং যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কোনভাবেই মিলছে না সমাধান, এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে জেলা প্রশাসক বলেছেন, ইতিমধ্যেই ময়লা আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভাকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই মিলবে সমস্যার সমাধান। 

সরেজমিন জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকার ফলে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে মস্তফাপুর ইউনিয়নের ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের ব্যস্ততম সড়কের পাশে। মাদারীপুর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে ৩৫ টন বর্জ্য বের হয়। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য ফেলার জন্য পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় ভাগাড় বা ডাম্পিং স্টেশন করা সম্ভব হয়নি। তাই কয়েক বছর ধরে বছর ধরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মস্তফাপুর ইউনিয়নের বড়মোহের এলাকায় পৌর মেয়র খালিদ হোসেনের নিজস্ব জমিতে ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

দেখা যায়, ২৪ ফুট চওড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বেশ কিছু জায়গা ময়লার ভাগাড়ের দখলে। সাধারণ মানুষকে নাকে-মুখে হাত চেপে, নিঃশ্বাস বন্ধ করে চলাচল করতে হচ্ছে। দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের বসতবাড়িতে। শুধু মাদারীপুর পৌরসভার ময়লাই নয় রাজৈর ও কালকিনি পৌরসভার ময়লাও ফেলা হয় এই মহাসড়কে। দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক হিসেবেই পরিচিত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক। এই মহাসড়কের মাদারীপুরের ৪৮ কিলোমিটার অংশে কমপক্ষে ৩টি স্থানে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। মাদারীপুর, কালকিনি, রাজৈর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা এই মহাসড়কে ফেলা হয়। এর ফলে সড়কের নাজেহাল অবস্থা। প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে এই এক লেন সড়ক দিয়ে। যার কারণে একদিকে ঘটছে দুর্ঘটনা অন্য দিকে পানি ও বাতাস দুষিত হয়ে উঠছে। আর বর্জ্য নিষ্কাশনে অব্যবস্থাপনার ফলে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীদের পাশাপাশি যাত্রী ও চালক। মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা সড়াতে বার বার তাগিদ দিলেও কোনো সমাধান পাননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মস্তফাপুরের বাসিন্দা মিঠু দরজি বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকাই দায়। নাক মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধে হওয়ায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি। পৌর মেয়রের কাছে আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিন। 

হযরত আলী নামে আরেকজন বাসিন্দা বলেন, ‘লোকালয়ের মধ্যে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে আমরা বহু অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। 

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ বলেন, মহাসড়কের ময়লা ফেলার কারণে পথচারীদের দুর্গন্ধে বিভিন্ন রকমের রোগ হতে পারে। খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার ফলে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রভাব পড়ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এর ফলে ওই এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। এসবের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইতিমধ্যেই ময়লা ফেলার জন্য পৌরসভারকে ৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর