বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ সুন্দরবন উপকূলে ধেয়ে আসার খবরে বাগেরহাটে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এ ছাড়াও উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার দুর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক।
সুন্দরবন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের ম্যানগ্রোভ এই বন থেকে লোকালয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। ছুটি বাতিল করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে শনিবার দুপুর থেকে দমকা হাওয়ার সাথে থেমে-থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। পূর্ণিমা থাকায় জেলার সব নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ কিলোমিটার ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকজনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় দুপুরে জরুরি সভা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ‘এলার্ট থ্রি’ জারি করে সব বাণিজ্যিক জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ৩৩টি জাহাজসহ সব লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিরাপদ স্থানে রাখতে মোংলা বন্দর জেটি খালি করে দেওয়া হয়েছে।বন্দরের নিজস্ব ‘এলার্ট ফোন’ জারি করা হলে বন্দর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, মোংলা বন্দর, সুন্দরবন বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড কন্ট্রোল রুম খুলে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবরে বন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশী পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের ম্যানগ্রোভ এই বন থেকে লোকালয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সুন্দরবনের দুর্বল অবকাঠামো থাকা ঝাপসি, আমুরবুনিয়া, কলমতেজী, নাংলি, লাউঢোব ও ধানসাগর টহল ফাঁড়ি ও অফিসের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের পার্শ্ববর্তী বন অফিসে অশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই