কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর বলেছেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ করতে এসে দেখি, একটা থানায় স্বচ্ছ মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া কষ্টকর হয়ে গেছে। অর্থের বিনিময়ে, আত্মীয়তার কারণে, রাজনীতির কারণে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে। ফলে অনেক থানায় সাতজন স্বচ্ছ মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড এই সমাবেশের আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মো. নূর আলম মিয়া।
নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রহণ করতে আমরা আসিনি, অনুমোদন দিতে আসিনি। আমরা এসেছি তাদের তাড়িয়ে দিতে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস লিখে যেতে চাই। মুক্তিযোদ্ধা সংসদে থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমাদের ত্যাগের কথা জানিয়ে যেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে তরুণেরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিল, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জনগণের ত্যাগের মূল্যায়ন হয়নি। জনগণের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি না পাওয়ায় জাতির গৌরব তারা ধারণ করতে পারেনি। যুদ্ধের পর প্রায় ৩০ হাজার তরুণ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে—এটা বাংলাদেশের ইতিহাস নয়, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবও নয়।
নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, একটা জাতি কখনো মিথ্যা তথ্যের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকতে পারে না। ১৯৪৭ সালেও আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, কিন্তু স্বীকৃতি পাইনি। একাত্তরে রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি, তারপরও আমাদের অর্জন বিদেশে পাচার করা হয়েছে, বন্ধুদের হত্যা করা হয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করা হয়েছে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহম্মেদ খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন