বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের শুরুটা ১৯৯২। চ্যাম্পিয়ন হলেও সেবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হার স্বীকার করতে হয়েছিল ইমরান খানের পাকিস্তানকে। এরপর বিশ্বক্রিকেটের মেগা আসরে আরও ৫বার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই প্রতিপক্ষ। কিন্তু প্রত্যেকবারই ভারতের বিরুদ্ধে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে পাকিস্তানকে। অর্থাৎ বিশ্বকাপের আসরে ৬ বার ২ দেশের মুখোমুখি সাক্ষাতে ভারতের পক্ষে ফলাফল ৬-০।
আজ রবিবার চলতি বিশ্বকাপে ফের একবার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। পরিসংখ্যানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবার কি ফলাফল নিজেদের দখলে নিতে পারবে সরফরাজের পাকিস্তান, নাকি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ জয়ের ধারা বজায় রেখে ফলাফল ৭-০ করবে বিরাটের ভারত। উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে। তবে তার আগে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের বিগত ৬ ম্যাচের ফলাফল দেখে নেওয়া যাক একনজরে-
সিডনি, ১৯৯২ : ভারত জয়ী ৪৩ রানে-১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জয়ের ৯ বছর বাদে বিশ্বকাপের মেগা আসরে প্রথমবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় ভারত। ভারতের উইকেটেরক্ষক কিরন মোরেকে উদ্দেশ্য করে ব্যাট উচিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান জাভেদ মিঁয়াদাদের বিতর্কিত অঙ্গভঙ্গি অনুরাগীদের স্মৃতিতে এখনও টাটকা। অজয় জাদেজার ৪৬ রান ও শচীন টেন্ডুলকার অপরাজিত ৫৪ রানে ভর করে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২১৬ রান তোলে ভারত। জবাবে ওপেনার আমির সোহেলের ৬২ রান ও জাভেদ মিঁয়াদাদের ৪০ রান সত্ত্বেও ভারতীয় বোলারদের দাপটে ১৭৩ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
বেঙ্গালুরু, ১৯৯৬ : ভারত জয়ী ৩৯ রানে-
প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার নভজোৎ সিং সিধুর ৯৩ রান, মিডল অর্ডারে অজয় জাদেজার ৪৫ রান ভারতকে পৌঁছে দেয় ২৮৭ রানে। জবাবে দুরন্ত শুরু করেন দুই পাক ওপেনার আমির সোহেল ও সাঈদ আনোয়ার। কিন্তু ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ও অনিল কুম্বলের ৩ উইকেট দখল করে পাকিস্তানের কাজ কঠিন করে তোলে। ভারতের ২৮৭ রানের জবাবে ২৪৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি পাকিস্তান।
ম্যানচেস্টার, ১৯৯৯ : ভারত জয়ী ৪৭ রানে-
বিশ বছর আগে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ম্যানচেস্টারেই মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দেশ। শচীন টেন্ডুলকারের ৪৫, রাহুল দ্রাবিড়ের ৬১, অধিনায়ক মোহম্মদ আজহারউদ্দিনের ৫৯ রানকে প্ল্যাটফর্ম করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৭ রান তোলে ভারত। এরপর বল হাতে জ্বলে ওঠেন ভেঙ্কটেশ প্রসাদ। প্রসাদের ৫ উইকেট, জাভাগাল শ্রীনাথের ৩ উইকেট ও অনিল কুম্বলের জোড়া উইকেট শিকারে ৪৫.৩ ওভারে ১৮০ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান।
সেঞ্চুরিয়ান, ২০০৩ : ভারত জয়ী ৬ উইকেটে-
সাঈদ আনোয়ারের শতরানে প্রথমে ব্যাট করে ২৭৩ রান তোলে পাকিস্তান। জবাবে শচীন টেন্ডুলকারের ৭৫ বলে ৯৮ রানে ফিকে হয়ে যায় পাকিস্তানি ওপেনারে ইনিংস। মাস্টার ব্লাস্টারের ধুন্ধুমার ইনিংস ছাড়াও পঞ্চম উইকেটে রাহুল দ্রাবিড় ও যুবরাজ সিংয়ের ৯৯ রানের অবিভক্ত পার্টনারশিপে মসৃণ জয় তুলে নেয় ভারত। দ্রাবিড় ৪৪ রানে ও যুবরাজ অপরাজিত থাকেন ৫০ রানে।
মোহালি, ২০১১ : ভারত জয়ী ২৯ রানে-
সেমিফাইনালে ব্যাট হাতে ফের নায়ক হয়ে ওঠেন শচীন টেন্ডুলকার। মূলত তার ৮৫ রানে ভর করে মোহালিতে পাকিস্তানকে ২৬১ রানের টার্গেট দেয় ভারত। ওয়াহাব রিয়াজ নেন ৫ উইকেট। জবাবে মোহম্মদ হাফিজের ৪৩ ও মিসবা উল-হকের ৫৬ রান সত্ত্বেও ভারতীয় বোলারদের দাপটে ২৩১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান।
অ্যাডিলেড, ২০১৫ : ভারত জয়ী ৭৬ রানে-
শচীনোত্তর যুগের অবসানের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম সাক্ষাৎ। তবে প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরানের নজির গড়ে শচীনের অভাব পূরণ করেন বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি। পাকিস্তানি বোলার সোহেল খানের ৫ উইকেট সত্ত্বেও বিরাটের ১০৭ রানে চেপে ভারত স্কোরবোর্ডে ৩০০ রান তোলে। জবাবে আহমেদ শেহজাদের ৪৭ রান ও মিসবা উল-হকের ৭৬ রানেও পরিসংখ্যান বদলাতে পারেনি পাকিস্তান। ৪৭ ওভারে ২২৪ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ভারতের পক্ষে মোহম্মদ শামি নেন ৪ উইকেট।
বিডি-প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ