আমার নাম জেসিকা। আমি সেন্ট যোসেফ স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি। আজ তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেব আমার তিন বন্ধুর সঙ্গে। স্কুলে ওরা গোয়েন্দা নামে পরিচিত। পিটার স্যার ওদের ডাকেন খুঁদে গোয়েন্দা বলে। পিটার স্যার ভারি মারকুটে স্বভাবের। লাঠির মার নয়, মুখের মার। আমরা সবসময় এই বলে ঘর থেকে বেরুই, হে ঈশ্বর! আজ যেন পিটার স্যারের স্বীকার হতে না হয়। বেশির ভাগ দিনই গড আমাদের কথা শোনেন। কদাচিৎ গড ভুলে যান। সেদিনটিই পিটার স্যারের দিন হয়ে ওঠে। থাক সেসব কথা। এসো পরিচয় হই গোয়েন্দা বন্ধুদের সঙ্গে।
তাল গাছের মতো লম্বা মানুষ দেখেছো কখনো? কেভিন সেরকম। এতটুকুন বয়সেও উচ্চতায় ওর আম্মুকে ছড়িয়ে গেছে। ক্লাস নাইনের প্যাটেল হল স্কুলের সবচেয়ে লম্বা ছেলে। তার পরই আমাদের গোয়েন্দা বন্ধু কেভিনের স্থান।
অর্থী ঠিক কেবিনের বিপরীত। সবচেয়ে খাটো মেয়ে স্কুলের। তবে অসম্ভব মেধাবী।খুঁদে গোয়েন্দা দলের তৃতীয় সদস্য হল রিচিটা। তেমন লম্বাও নয়। বেটেও নয়। বুদ্ধি-শুদ্ধিও স্বাভাবিক। অর্থীর চেয়ে কম, কেভিনের চেয়ে বেশি। রিচিটার সবচেয়ে ভালো দিক হল, স্বাভাবিক বুদ্ধি দিয়েই সে অস্বাভাবিক সব সূত্র মিলিয়ে নেয়। তাই খুঁদে গোয়েন্দা দলে শক্ত জায়গা করে নিয়েছে বাকি দু’জনের মন জয় করে।
সকাল থেকেই আমার কাজিন প্রতীকের দারুণ মন খারাপ। জিজ্ঞেস করতেই বলল- সকালে নাস্তার সময় আম্মু একটি কলা দিয়েছিল। কিন্তু কলাটি এখন পাচ্ছি না। অ্যা...অ্যা...
আচ্ছা! আচ্ছা শোন। আমি তোমার কলাটি খুঁজে দিতে পারব।
সত্যি!
হ্যাঁ! সত্যি। তার আগে তোমাকে একটি কাজ করতে হবে?
কী কাজ?
কান্না বন্ধ করো। শান্ত হও। আমার গোয়েন্দা বন্ধুরা তোমার কলাটি খুঁজে দেবে।
প্রতিমকে থামিয়ে খুঁদে গোয়েন্দা দলকে ফোন করলাম।
২.
কেভিন, অর্থী, রিচিটা মিলে সারা ঘর খুঁজেও কলা তো দূরের কথা কলার গন্ধও পেল না।
ভারি মুশকিল পড়লাম তো। বলল কেভিন।
তাহলে এখন কী করব? অর্থী জিজ্ঞেস করে।
রিচিটা বলল, আমরা কেন প্রতীককে জেরা করছি না?
‘ইয়েস’ বলে লাফিয়ে ওঠল তিনজনই।
প্রতীক এখন তিন গোয়েন্দার মুখোমুখি।
প্রথমে কেভিন জিজ্ঞেস করে, প্রতীক! তোমার কী মনে আছে সর্বশেষ কলাটি কোথায় রেখেছিলে?
মাথা চুলকাতে চুলকাতে প্রতীক জানায়, কিছুই মনে করতে পারছে না সে।
ঠিক আছে। কোন ব্যাপার না। এটা বলো, কতক্ষণ আগে তুমি শেষ বারের মতো কলাটি দেখেছিলে?
অ্যা...অ্যা... কিছুই মনে পড়ছে না আমার। অ্যা...অ্যা...
এবার অর্থী কথা বলে। কান্না থামাও প্রতীক। আমরা অবশ্যই তোমার কলা খুঁজে বের করবো।
কান্না থামিয়ে অর্থীর দিকে তাকায় প্রতীক।
অর্থী জিজ্ঞেস করে, সকাল থেকে এ পর্যন্ত কী কী করেছ তুমি? তুমি কি সকালে খেলা করেছ? তারপর কোন বই পড়েছে অথবা কোনো বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছ?
আমি এরকম কিছুই করেনি।
তাহলে অন্য কী করেছ? তুমি কী খাবার টেবিলে গিয়েছিলে? চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করে রিচিটা।
খাবার টেবিলে...খাবার টেবিলে...
সেখানে তুমি একটি কলা দেখতে পাও।
কলা...কলা... এবং সেটি খেয়ে ফেল।
ওয়েট। ওয়েট। আমার কিছু মনে পড়ছে।
আর কলাটি এখন তোমার পেটেই আছে। রাইট?
রিচিটা একদম ঠিক বলেছ তুমি। কলাটি আমি খেয়ে ফেলেছি। আনফোর্চুনেটলি তা ভুলে যাই। আর তোমাদের ডেকে এনে কষ্ট দিই। সো সরি গোয়েন্দা বন্ধুরা।
হুররে! আমরা রহস্যের সমাধান করে ফেলেছি- বলে লাফিয়ে ওঠে খুঁদে গোয়েন্দা দল।