শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

পরী রানীর বিচার

বৃষ্টি রানী

পরী রানীর বিচার

পরী রানীর হুকুম হলো তার রাজ্যর যে যেখানেই থাকুক সবাইকে আগামী রবিবার পরিস্থানের রাজ দরবারে হাজির হতে হবে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে রাজ দরবারে পেশ করতে হবে এবং অভিযোগ বাক্সে অভিযোগ জমা দিতে হবে। কারও কোনো নালিশ থাকলে রাজ দরবারে পেশ করতে হবে। পরিস্থান রাজ্য জুরে হুলুসুলি পরে যায়। চারদিকে কানাঘোষা চলতে থাকে। পরী রানী কেন সবাইকে রাজ দরবারে ডাকল। পরী রানী তার উজির নাজির, পায়েক পেয়াদা সবাইকে রাজ দরবারে হাজির হতে বলল। সবাইকে হুকুম দিল রাজ দরবারের ভিতর এবং বাহিরে এমনভাবে সাজাতে বলল, যাতে কোন মনীষী বা যতি বিদ্যার কেউ ভুল ধরতে না পারে। পরিস্থানের বাহিরের গেটে এমন ভাবে সাজাতে বলল, কখন দিন হবে কখন রাত হবে কেউ যেন বুঝতে না পারে। পরী রানীর হুকুম এক  বিন্দুও নড়চড় হবে না। তার পরও যখন রাজ দরবার ভিতর বাহির সাজানো হবে পরী রানী তা পরীক্ষা করবেন। কাজের কোনো ভুল হলে তার বিচার হবে কঠিন। অতএব সবাই রাজ দরবার রাত দিন পরিশ্রম করে এমন ভাবে সাজাই কাজের কোনো ভুল ত্রুটি নাই। উজির পরি রাণিকে রাজ দরবার প্রদর্শন করার অনুমতি দিল। রাজ দরবারের বাহিরে এমন অপরূপ কারুকাজ করে সাজানো হয়েছে যে, কোনো পরী যদি এর ভিতরে প্রবেশ করে তার চেহারা অটোমেটিকভাবে বদলে যাবে। পরী রানী উজিরকে সঙ্গে নিয়ে রাজ দরবারে প্রবেশ করে। পরী রানী ডান পা রাজ দরবারে পরার সঙ্গে সঙ্গে রাজ দরবার আলোময় হয়ে যায়। অটোমেটিক ভাবে ফুলের পাপড়িগুলো পরতে থাকে। পাখিরা ফুলের মালা নিয়ে পরী রানীর গলায় পড়িয়ে দেয়। অটোমেটিকভাবে শরবরে পেয়ালাগুলো পরী রানীর সামনে হাজির হয়। ডানা লাগানো চেয়ার আপনা আপনি এসে যায়। ময়ূরের পাঙ্কা আপন ভাবে পরী রানীকে বাতাস দিতে থাকে। রাজ দরবার ভিতরের দেয়ালগুলোতে এমন আলপনায় আঁকানো হয়েছে যেন সব ছবিগুলোই জীবন্ত। ছবিগুলো পরী রানীকে যেন স¦াগত জানাচ্ছে। এরপর পরী রানী বাহিরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই চাঁদের আলো এসে ছোঁয়া দেয়। আকাশভরা তারাগুলো যেন পরী রানীকে পরিস্থানের বাহিরে এসে ছোটাছুটি করছে। দিন না রাত কোনটাই বোঝা যাচ্ছে না। রাজ দরবারের বাহিরের

দৃশ্যগুলো এমন ভাবে সাজানো হয়েছে ফুলকে ছুঁইতে গেলে ফুল মালা হয়ে যায়। কোনো ফল ধরতে গেলে মিষ্টির রস গ্লাস ভর্তি হয়ে সামনে এসে যায়। কোনো প্রজাপতির দিকে তাকালে প্রজাপতির ডানা মেলে পরী রানীর হাতের উপর এসে বসে যায়। এত সৌন্দর্য ও এত কারুকাজ পরিস্থান ছাড়া পৃথিবীর কোনো মানব রাজ্যর এমন স¦প্ন ছোঁয়া পাওয়া যাবে না। পরী রানীর গেটের বাহিরে পা রাখার সময় একটি ময়ূর পঙ্খিরাজ দেখেছিল। কিন্তু সেই ময়ূর পড়িখরাজ পরী রানীরকে দেখে কোনো রকমের স¦াগত জানায়নি। এটাই পরি রাণির মনে আঘাত লাগে। পরী রানী উজিরকে এ ব্যাপারে কথা বললে উজির ধামাচাপা দেওয়ার মতো আজে বাজে কথা বলে পরী রানীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। পরী রানীকে বোঝানো বা ধোঁকা দেওয়া পরী রাজ্যে কোনো পরী নাই। ধরে ফেলে এখানে কোনো ঝামেলা হয়েছে। পরী রানী নায়ককে হুকুম দেয় উজিরকে আটকে ফেলো। তাকে কয়েদ করে রাজদরবারে নিয়ে যাও। আগামীকাল রবিবার। রাজ দরবারে ভিতর ও বাহিরে ঘোষণা করে দেওয়া হোক সকাল ১০টায় উজিরের বিচার করা হবে। পরিস্থানের সব পরী রাজ দরবারে আসতে থাকে। সব পরীই মহারানীর গেটের  ভিতরে বাহিরে কারুকাজ দেখে প্রশংসা না করে পারছে না। এত সৌন্দর্য, এত মাধুর্য, এত অপরূপ, দিন না রাত কোনো কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। শুরু হলো বিচার। ময়ূর পঙ্খিরাজ কেন পরী রানীকে দেখে স¦াগত জানাল না। এর কারনণ দু’দিন যাবত উজির ময়ূর পড়িখরাজকে কোনো কিছু খেতে দেয়নি। ময়ূর পঙ্খিরাজের খাবারের অর্থ চুরি করেছে। পরী রানী উজিরকে তার দুই ডানা কেটে ফেলার হুকুম দিয়ে দেয়। জল্লাদ তার দুই ডানা কেটে ফেলে। হুকুম দেওয়া হয় উজিরকে পরী রানীর রাজ্য থেকে বাহির করে পৃথিবীর কোনো মানব রাজ্যে ছেড়ে দেওয়া হোক। সবাই দেখুক পরী রানীর রাজ্যে থাকতে হলে পরী রানীর হুকুম মানতে হবে। পরিস্থানের কঠিন বিচার দেখে সবাই ভয় ও আতঙ্গে পরী রানীকে স¦াগত জানিয়ে রাজদরবার থেকে বিদায় নেয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর