দোতলার ব্যালকনিতে বসে আছে ফাহিম। কিছুক্ষণ আগে মামণির বকুনি খেয়েছে সে। ফাহিমদের বাসার সামনে মেইন রাস্তা। রাস্তার ওই পাশে একটি শিউলি ফুলের গাছ।
এখন শরৎকাল। গাছে অনেক ফুল ফুটেছে। আর কি মিষ্টি গন্ধ! অনেক দূর থেকে টের পাওয়া যায় ঘ্রাণ।
আজকে ফাহিমের ছুটির দিন ছিল। তাই আজানের পরপরই ঘুম থেকে উঠেছে সে। বাবার সঙ্গে নামাজও পড়েছে। মা নাশতা তৈরি করছিলেন। ফাহিম মায়ের কাছে গিয়ে বলে, মা একটি কথা বলব।মা বললেন, বলো। কী কথা?
ফাহিম বলে, মা রাস্তার ওই পাশে একটি শিউলি ফুলের গাছ আছে। ভোর বেলা কত ফুল ঝরে ঝরে পড়ে আছে। আমাকে ফুল কুড়াতে যেতে দেবে?
মায়ের মুখ কেন জানি ভার হয়ে গেল।
‘এখন একা একা বাইরে যাওয়া যাবে না, নিচে নামা যাবে না। আর আমিও তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারব না। কাজ করছি দেখছ তো।’
ফাহিম বলে, ‘আমি একা একা যেতে পারব, মা। আমি তো আর ছোট্টটি নেই।’
মা এবার হেসে বকা দিলেন।
‘আজকে ছুটির দিন। নিজের পড়া শেষ করতে হবে না?
এখন নাশতা খেয়ে পড়তে বসবে।’
ফাহিমের মন খারাপ হয়ে যায়। সে আশা করেছিল মা তাকে যেতে দেবেন। ফাহিম আবারও ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়। ব্যালকনি থেকে শিউলি গাছটি দেখা যায় ভালো ভাবেই। ফাহিম সে দিকে তাকিয়ে ভীষণ অবাক হয়।
দুজন টোকাই ছেলে শিউলিতলায় ঝরেপড়া ফুলগুলো কুড়িয়ে নিচ্ছে। মুখে ওদের কী ঝলমলে হাসি।
ফাহিম অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে।