শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নভোচারীদের কথা

নভোচারীদের কথা

মহাকাশে মহাকাশচারীদের অসংখ্য নতুন ও বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়।  এমনই কিছু ঘটনা সম্পর্কে জানা যাক-

♦ অ্যাস্ট্রোনট শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘অ্যাস্ট্রোন নটস’ থেকে এসেছে। শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হলো নভোচারী। আর ইংরেজি এই শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘অ্যাস্ট্রোন নটস’ থেকে, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘তারকা নাবিক’।

♦ মহাশূন্য ভ্রমণে নভোচারীকে হাড় ও পেশির ক্ষয়রোধে সচেতন থাকতে হয়। যে জন্য নভোচারীরা প্রতিদিন প্রায় দুই ঘণ্টা করে ব্যায়াম করে থাকেন। তবে সেজন্য সাধারণ ব্যায়াম যন্ত্রপাতির বদলে মহাশূন্যের জন্য বানানো বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

♦ মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে থাকার কারণে নভোচারীদের উচ্চতা ৩% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। দীর্ঘদিন মহাশূন্যে থাকার কারণে এমন হয়। কারণ এ ক্ষেত্রে শরীরের উল্লম্ব দিকে প্রতিনিয়ত কোনো বল কাজ করে না যা পৃথিবীতে থাকাকালীন অভিকর্ষ বল করে থাকে। ফলে শরীরের সংযোগগুলো সামান্য প্রসারিত হয় এবং শরীরের উচ্চতা বাড়িয়ে দেয়। তবে পৃথিবীতে ফিরে এলে কয়েকমাসের মধ্যে নভোচারীদের এ বাড়তি উচ্চতা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

♦ এপোলো-১৬ নভোচারী চার্লস ডিউক তার স্ত্রী এবং তাদের দুই ছেলের একটি ছবি চাঁদে রেখে এসেছিলেন। তিনি ছবিটির পেছনে স্বাক্ষর করেছিলেন এবং লিখেছিলেন, ‘এটি পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে আসা নভোচারী ডিউকের পরিবার। চাঁদে অবতরণের সময় ১৯৭২ সালের এপ্রিল।’

♦ মহাকাশে বসবাসের অন্য অনেক বিষয়ের মতো ঘুমও অদ্ভুত। আমরা জানি, মহাকাশযানে খুব কম মাধ্যাকর্ষণ রয়েছে, এটি ‘মাইক্রোগ্রাভিটি’ নামেও পরিচিত। এ কারণে আমরা নভোচারী এবং মহাকাশযানে বিভিন্ন বস্তুর চারদিকে ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য দেখে থাকি। নিশ্চয়ই ঘুমানোর সময় এমন ভেসে বেড়ানোটা মোটেও নিরাপদ হবে না। তাই নভোচারীদের ঘুমানোর জন্য বিশেষ সিøপিং ব্যাগ রয়েছে যা প্রত্যেকের নির্ধারিত স্থানে দেয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায় যাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কোনো নভোচারীকে ঘুরে বেড়াতে না হয় এবং কোনো দুর্ঘটনা না ঘটাতে হয়।

♦ মহাশূন্যে নভোচারীরা মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে কাজ করে অভ্যস্ত। ফলে যে কোনো জিনিস রাখতে হলে তারা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে সেটি রাখার চেয়ে বস্তুটি ছেড়ে দেওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আর বস্তুগুলো সাধারণত শিপের ভেতর ভাসতে থাকে। কিন্তু সমস্যাটি বাধে যখন নভোচারীরা ফিরে আসেন। ফিরে আসার পর স্পেস শিপের মতো করে তারা বিভিন্ন বস্তু ব্যবহারের পর অভ্যাসবশত বাতাসে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পৃথিবীতে তো আর মাইক্রোগ্রাভিটি থাকে না। ফলে অভিকর্ষের কারণে সেটি ভূপাতিত হয়।

♦ মহাশূন্যে গোসল করতে হলে ব্যবহার করতে হয় বিশেষায়িত শাওয়ার। যেহেতু পানিপ্রবাহের জন্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রয়োজন, তাই মহাকাশযানের শাওয়ারগুলো কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। পানির চারদিকে ছড়িয়ে পড়া রুখতে নভোচারীরা একটি সিলিন্ডার আকৃতির বদ্ধ শাওয়ার এর ভেতর গোসল করে থাকেন। এ সময় শরীর ধৌত করার জন্য তারা একটি পানির স্প্রে ব্যবহার করে এবং একটি ভ্যাকুয়ামের সাহায্যে তাদের শরীরে থাকা পানি শোষণ করার মাধ্যমে গা শুকান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর