শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা
খোলা কলাম

সবারই জয়, পরাজয় আওয়ামী লীগের

বিভুরঞ্জন সরকার

সবারই জয়, পরাজয় আওয়ামী লীগের

চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে ধাক্কা খেয়েছে তা সামলে উঠে আওয়ামী লীগ কি আগামী জাতীয় নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? নাকি জাতীয় নির্বাচনেও এই শোচনীয় পরাজয়ের ধারাই অক্ষুণ্ন থাকবে? রাজনৈতিক পণ্ডিত-বিশ্লেষক ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। কেউ বলছেন এরকম ফল যে হবে তা আগেই বোঝা গেছে। আবার কারও মত এতটা বিপর্যয় প্রত্যাশা ছিল না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারাই জিতবে বলে বিএনপি নেতারা দাবি করলেও তাদের আত্দবিশ্বাসে যে যথেষ্ট ঘাটতি ছিল সেটা বোঝা গেছে ভোটের দিনও দলের পক্ষ থেকে কারচুপি, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রসহ নানা ধরনের অভিযোগ উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। ছবিযুক্ত ও ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা, ভোটারদের সচেতনতা এবং মিডিয়ার কড়া নজরদারির কারণে এখন নির্বাচনে কারচুপি করা, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়া যে সহজ কাজ নয় সেটা বিএনপি নেতারা বুঝতে চান না। তারা তাদের সময়ে যেভাবে নির্বাচন করেছেন, সেটাকেই স্ট্যান্ডার্ড ধরে অমূলক অভিযোগ তুলে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তি বিস্তার ঘটানো ছাড়া ভালো কিছু যোগ করতে পারেননি।

আমাদের দেশের ভোটারদের মনস্তত্ত্ব আওয়ামী লীগও যেমন বুঝতে পারেনি, তেমনি পারেনি বিএনপি। আওয়ামী লীগ যদি বুঝত যে, চার সিটির একটিতেও তাদের সমর্থিত প্রার্থীর জয়লাভের সম্ভাবনা নেই, তাহলে তারা মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ার আগেই চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ত না। জয়ের ব্যাপারে সন্দেহ থাকার কারণে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে কত কায়দাকানুন করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরকে উত্তর-দক্ষিণ দুই ভাগ পর্যন্ত করা হয়েছে। রংপুর, গাজীপুরের নির্বাচনও যথাসময়ে করা হয়নি। কিন্তু খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে এত তাড়াহুড়ার কারণ কী? এই চারটি সিটিতে ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট নির্বাচন হয়েছিল। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। হিসাব মতে এবার অন্তত আগস্ট মাস পর্যন্ত ওই মেয়রদের দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু তিন মাস আগেই নির্বাচন দিয়ে সরকার কি চমক দেখাতে অথবা অর্জন করতে চেয়েছে সেটা কারও কাছেই পরিষ্কার নয়। সরকারের কাছে কি এমন তথ্য ছিল যে, এই চার সিটিতে অন্তত তিনটির মেয়ররা যে উন্নয়ন করেছেন তাতে তাদের বিজয় ঠেকিয়ে রাখার সাধ্য কারও নেই? নাকি তারা ভেবেছিল হুট করে নির্বাচন দিয়ে দিলে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেবে না, তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে দেবে? অথবা তারা কি এই নির্বাচনে হারবে জেনেও এই ভেবে নির্বাচনটা দিয়েছে যে, যে কোনো মূল্যে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিয়ে তারা প্রমাণ করবে দলীয় সরকারের অধীনেও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব? আর এটা প্রমাণ হলেই তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি যে আন্দোলন করছে তার যৌক্তিকতা দুর্বল হয়ে পড়বে?

প্রকৃতপক্ষে কোন বিবেচনায় সরকারকে চার সিটিতে আগাম নির্বাচনে উৎসাহী করেছে সেটা জানার সুযোগ নেই। তবে এভাবে গোহারা হারার জন্য যে সরকার নির্বাচন দেয়নি, সেটা জোর দিয়েই বলা যায়। নির্বাচনে পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যাই বলা হোক না কেন, কোনো আপ্তবাক্য দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে যে হতাশা দেখা দিয়েছে তা দূর করবে না। চার সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের বিরূপ প্রভাব দলকে কতটা হতোদ্যম করবে সেটা সম্ভবত নীতিনির্ধারকরা এখনো বুঝতে পারছেন না। যে হতাশা তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করার দৃঢ়তা দেখানো আওয়ামী লীগের র্যাঙ্ক অ্যান্ড ফাইলের পক্ষে কতটা সম্ভব হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'এই নির্বাচনে জনগণ, গণতন্ত্র ও সরকারের জয় হয়েছে।' একজন পাঠক আমাকে টেলিফোনে বলেছেন, বিএনপির যে জয় হয়েছে সেটা প্রধানমন্ত্রী বললেন না কেন? ওই পাঠক মনে করেন, নির্বাচনে সবারই জয় হয়েছে, পরাজয় হয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের। কারণ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের কিছুই অর্জন নেই। সরকার জিতেছে এ কারণে যে, তারা প্রমাণ করতে পেরেছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কাজেই তিনি ভোট নিয়ে ছিনিমিনি বরদাশত করবেন না, এটাই স্বাভাবিক। চার সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে, তাদের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান অসম্ভব নয়। সরকারি হস্তক্ষেপ উপেক্ষা করার মতো শক্ত শিরদাঁড়া তাদেরও আছে। সেনা মোতায়েন না করলেও যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করে ভোটারদের নিরাপত্তা ও ভোটদানের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা যায় সেটাও নির্বাচন কমিশন দেখিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানা পাঁয়তারা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব ত্যাগ করে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়ে যে বিজয় লাভ করেছে তার কোনো তুলনা হয় না। এতদিন বিএনপি অভিযোগ করে এসেছে, সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে।

সরকার ক্রমাগত গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের যে সব কর্মসূচি তারা ঘোষণা করেছে, তাতে মানুষের কাছ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে সরকারের জনপ্রিয়তা কমলেও বিএনপির জনপ্রিয়তা বেড়েছে সেটা অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। কিন্তু চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে এবং বিপুল জনসমর্থনে বিজয়ী হয়ে তারা তাদের বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণ করতে পেরেছে। 'জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে' বলে বেগম খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা এখন অস্বীকার করা হবে কোন যুক্তিতে? সে জন্যই বিএনপির উচিত আন্দোলনের নামে সহিংসতা পরিহার করে নির্বাচনী আন্দোলনে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। তত্ত্বাবধায়কের দাবি নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার যে কথা বেগম জিয়া বলেছেন সেটাতে তিনি অনড় না থাকলেই ভালো করবেন। রাজপথের আন্দোলনের ক্রমাগত বিফলতা বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে পরাজিত মানসিকতার জন্ম দিয়েছিল, চার সিটি নির্বাচনের বিজয় তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা জুগিয়েছে, আত্দপ্রত্যয়ী করে তুলেছে। এ অবস্থায় রাজপথের আন্দোলনে শক্তি ক্ষয় করে নেতা-কর্মীদের সরকারের আক্রোশ-আক্রমণের মুখে ঠেলে না দিয়ে সব শক্তি নিয়োগ করা উচিত জাতীয় নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি যে কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছিল তা থেকে বেরিয়ে আসার পথ তারা পেয়েছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস-উল্লাস দেখা যাচ্ছে। চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সবচেয়ে বড় লাভ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করতে পারা। চার সিটিতেই বিএনপির মধ্যে চরম দলাদলি ছিল। একক প্রার্থী দিয়ে এবং সেই প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য সবাই একজোট হয়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে দলের ভেতর দ্বন্দ্ব-কলহের নিরসন হয়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। আগেও এটা দেখা গেছে, নির্বাচন এলে বিএনপির অনৈক্য দূর হয়।

চার সিটি নির্বাচনের পর যে প্রশ্নটি সবচেয়ে বড় হয়ে সামনে আসছে, তা হলো এই নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ কি অর্জন করল? তারা কি পরাজয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের ত্রুটি-দুর্বলতা-ব্যর্থতা সম্পর্কে নির্মোহ মূল্যায়নের ব্যবস্থা করবে? নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে তেমন পড়বে না, এই ধরনের আত্দতুষ্টির মনোভাব নিয়ে বসে থাকবে? নির্বাচনে পরাজয় সম্পর্কে দলের পক্ষ থেকে একেক নেতা একেক রকম বক্তব্য না দিয়ে সব নির্বাচনী এলাকা থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর চুলচেরা পর্যালোচনা-বিশ্লেষণ করে করণীয় নির্ধারণ করা উচিত। চার সিটি নির্বাচনের পরাজয় যদি দলের মধ্যে আত্দজিজ্ঞাসার তাগিদ জাগাতে সক্ষম না হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা তিরোহিত হবে। সামনে সময় খুব বেশি নেই। এখনো যদি দলের সব পর্যায়ে সমান সচেতনতা ও সক্রিয়তা তৈরি হয়, দলের পোড়খাওয়া কর্মীরা যদি জেদ নিয়ে মাঠে নামে তাহলে তাদের রুখে দেওয়া সহজ কাজ হবে না। কিন্তু যদি দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ পরীক্ষিত কর্মীদের এখনো দূরে সরিয়ে রেখে সুবিধাভোগী, সুযোগসন্ধানী, তোষামোদকারীদের নিয়েই পথচলা অব্যাহত থাকে তাহলে বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে না।

চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের তুলনায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা সেরা ছিলেন, এটা কেউ বলছেন না। সদ্য বিদায়ী মেয়ররা এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ কম করেছেন কিংবা তারা প্রতিপক্ষের তুলনায় অযোগ্য সেটাও বলা হচ্ছে না। তারপরও তারা হারলেন বিপুল ভোটে। কেন? বলা হচ্ছে স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন হলেও জাতীয় রাজনীতির ইস্যুতেই আসলে এই নির্বাচন হয়েছে। আর নির্দলীয় নির্বাচন শেষ পর্যন্ত পরিণত হয়েছে দলীয় নির্বাচনে। বিদায়ী মেয়রদের তুলনায় নবনির্বাচিত মেয়ররা জনগণকে উন্নত সেবা দেবেন এমনটা কারও কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে না। তাহলে কেন পরিবর্তনের পক্ষেই ভোটারদের রায়? এই প্রশ্নের জবাবে অনেকেই অনেক কিছু বলছেন। বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল-গ্রুপিং, এমনকি নির্বাচনের সময়ও সবাই ঐক্যবদ্ধ না হতে পারা দলের জন্য কাল হয়েছে। এছাড়া সরকারের কিছু ব্যর্থতাও মানুষকে পরিবর্তনমুখী করে তুলেছে। অনেক ভালো কাজ করলেও একটি খারাপ কাজের জন্য সব শেষ হয়ে যায়। এক মণ দুধে এক ফোঁটা গোচোনার মতো। ভালো জিনিসটা মানুষের মনে থাকে না। খারাপটা সব সময় তাড়া করে। যারা বলছেন দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ভোটাররা রায় দিয়েছেন। তারা কি বলতে পারবেন বর্তমান সরকারের চেয়ে বিএনপি-জামায়াত আমলে দেশে সুশাসন বেশি ছিল? তবে এটা ঠিক বিএনপি-জামায়াত শাসনের সময় দেশে কেমন পরিস্থিতি ছিল সেটা সময়ের ব্যবধানের কারণে মানুষের স্মৃতি থেকে কিছুটা আড়াল হয়েছে। এই সরকারের আমলে শেয়ারবাজারে যদি ধস না নামত, পদ্মা সেতু প্রকল্পে যদি দুর্নীতির অভিযোগ না উঠত, গ্রামীণ ব্যাংক এবং ড. ইউনূসকে নিয়ে সরকার যদি দৃষ্টিকটু বাড়াবাড়ি না করত, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাস-টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি যদি কঠোর হাতে দমন করা হতো, বিরোধী দলের প্রতি যদি আক্রমণাত্দক আচরণ করা না হতো, আদালতের রায়ের অজুহাতে হুট করে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা না হতো, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা যদি না ঘটত, ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমনকে নিয়ে র্যাব যদি বেপরোয়া আচরণ না করত, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো বিরোধী দলের নেতাদের গুমের ঘটনা যদি না ঘটত, কয়েকজন মন্ত্রী যদি বাকসংযমের পরিচয় দিতে পারতেন, সরকারের মধ্যে যদি কাজ-কর্মের সমন্বয়হীনতা দেখা না দিত, মন্ত্রী-উপদেষ্টা-এমপি-স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ না উঠত, কৃষক যদি উৎপাদিত ফসলের ঠিকঠাক দাম পেত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম যদি দফায় দফায় না বাড়ানো হতো, দ্রব্যমূল্য যদি মানুষের নাগালের মধ্যে থাকত অথবা মানুষের আয়-উপার্জন বাড়ত, হলমার্ক-ডেসটিনির কেলেঙ্কারি যদি না ঘটত, সুশাসনের অভাব যদি এতটা তীব্র হয়ে দেখা না দিত, প্রধানমন্ত্রী নিজে যদি বিরোধীমতের ব্যক্তিদের প্রতি আক্রমণাত্দক ও অসহিষ্ণু মনোভাবের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য না দিতেন, তাহলে দেশের মানুষ কি সরকারের প্রতি এতটা বিরূপ হয়ে উঠত? এগুলো ভাবার মতো বিষয়। এগুলোর কোনটার জন্য কতটা ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে এগুলো যে জনসাধারণের মনে প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে বিতর্ক করা অন্যায় হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। জনগণের রায় আমরা মাথা পেতে নেব। এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের কিছু নেই। আজকাল আর জোর করে মানুষের ভোট আদায় করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এক্ষেত্রে বলার কথা এটাই, জনগণের রায় পাওয়ার জন্য মাথাটা একটু নত এবং ঠাণ্ডা রাখতে হয়। সংযম ও সমঝোতার পথে না হাঁটলে গণরায় পাওয়া যায় না।

লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক

ই-মেইল : [email protected]

 

 

সর্বশেষ খবর