রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

পোশাক খাতের 'রাজা'

বাংলাদেশি পোশাকশিল্পের বিরুদ্ধে পশ্চিমা কায়েমি স্বার্থের অঘোষিত যুদ্ধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ যুদ্ধের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গার্মেন্ট শ্রমিকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা এবং জীবনমান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে জিএসপি প্রত্যাহার করা করা হলেও বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের পোশাকশিল্প যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা কখনো পায়নি। অন্যান্য দেশের চেয়ে বহুগুণ শুল্ক দিয়েই বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার পায়। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বিরুদ্ধে পশ্চিমা কায়েমি স্বার্থের প্রচার প্রপাগান্ডা যখন তুঙ্গে তখন বিশ্বের শীর্ষ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশই রাজা। তাদের দৃষ্টিতে, বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের চেয়ে সস্তায় তৈরি পোশাক পাওয়া যায় না। সবার আগ্রহের কারণ এই একটাই। এ দেশটিতে সবচেয়ে সস্তায় পোশাক পাওয়া যায় বলে এ মুহূর্তে ক্রেতাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা নেই। শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও আনুষঙ্গিক খরচ কম বলে বাংলাদেশে কম খরচে পোশাক উৎপাদন করা সম্ভব। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক নানান দুর্ঘটনার পর ভারত ও এশিয়ার অন্য দেশগুলোর উৎপাদনকারীরা তাদের কাছে নতুন নতুন অর্ডার আসবে আশা করছিল। বাস্তবে তেমনটি ঘটেনি। চীন ছাড়া এশিয়ার শীর্ষ পোশাক উৎপাদনকারী দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। ওইসব প্রতিষ্ঠান জানায়, বিদেশি ক্রেতারা এখনো তাদের কাছে খুব একটা যায় না। দাম বিবেচনায় পোশাক খাতে বাংলাদেশই 'রাজা'। জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বাজার সংকুচিত হওয়ার যে কোনো আশঙ্কাই নেই_ সে আভাসই দেওয়া হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। তবে গার্মেন্ট শ্রমিকদের স্বার্থে নামমাত্র মূল্যে পোশাক কিনে আকাশচুম্বী দামে বিক্রি করার মনোভাব থেকে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরে আসতে হবে। শ্রমিকদের জীবনমান ও কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা কিছুটা বাড়তি দাম দেওয়ার উদারতা দেখাবেন এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

সর্বশেষ খবর