রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। গত মাসে পরিস্থিতি মারাত্দক রূপ নেয়। সারা দেশে জ্বরে আক্রান্তদের এক বড় অংশের শরীরে ডেঙ্গুর নমুনা পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার কমে এলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনার হাসপাতালগুলোতে আসা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৫০ শতাংশের শরীরে ডেঙ্গুর নমুনা পাওয়া গেছে। রাজধানীর অবস্থা আরও খারাপ। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসি আর) তথ্যমতে, আগস্টে কেবল ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৮৫ জন, যা গত পাঁচ বছরের যে কোনো আগস্ট মাসের হিসাবে সর্বোচ্চ। সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। এর মধ্যে জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে পরিস্থিতি বেশি খারাপ থাকে। এ বছর জুন থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭৭ জন ছিল বলে আইইডিসিআরের তথ্য সূত্রে উল্লেখ করা হয়। গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যা ৩০০ জনের নিচে ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হওয়ায় বেশির ভাগ রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন। কেবল গুরুতর অবস্থার শিকার হওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিয়ম থাকা সত্ত্বেও অনেক হাসপাতাল থেকে সরকারি তথ্যকেন্দ্রে ঠিকমতো তথ্য সরবরাহ করা হয় না। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের বড় নগরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। এ ঘাতক রোগে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও জীবাণুর উৎস বন্ধ না হওয়ায় বিপদ কাটছে না। জনসচেতনতার অভাবে রাজধানীর বেশির ভাগ বাড়িতে এডিস মশার নিরাপদ প্রজনন ও বংশবিস্তারের সুযোগ ঘটছে। জনস্বার্থে এ ব্যাপারে আরও বেশি প্রচার-প্রচারণা এবং মশা নিধন অভিযান চালানো দরকার। এ বিষয়ে সরকার ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে_ আমরা এমনটি দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর