বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

অবিভাগীয় ডাক কর্মচারী

বাংলাদেশ যখন মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে সে সময় এদেশেরই অবিভাগীয় ডাক কর্মচারীদের মাসিক বেতন মাত্র ৯০০ টাকা। এ টাকা দিয়ে একটা মানুষের এক মাসের হাত খরচা চালানোও সত্যিকারভাবে কঠিন। তাদের খাওয়া, থাকা ও অন্যান্য খরচ তো দূরের কথা। এ অর্থ দিয়ে পরিবার-পরিজন চালানো তো দুঃস্বপ্নের মতো। ডাক বিভাগের ২৪ হাজার অবিভাগীয় কর্মচারীকে বছরের পর বছর ধরে মাত্র ৯০০ টাকা বেতনে অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০ টাকা মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। তাদের চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। জীবনমানের উন্নতির কোনো লক্ষণও নেই। পেটে ভাত না পড়লেও প্রতি মুহূর্তে অবিভাগীয় কর্মচারীদের চাকরি হারানোর ভয়ে থাকতে হয়। এ ব্যাপারে আন্দোলন সংগ্রাম কম হয়নি। কিন্তু সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের কৃপা দৃষ্টির অভাবে তাদের ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন আসছে না। ডাক বিভাগের হতভাগ্য অবিভাগীয় কর্মচারীদের জন্য সংসদীয় কমিটির সুপারিশও পাত্তা পাচ্ছে না। স্মর্তব্য, ব্রিটিশ আমল থেকে দেশে দুই ধরনের ডাক কর্মচারী রয়েছে। একটি জাতীয় বেতন স্কেলভুক্ত, অন্যটি অবিভাগীয় (ইডি) বা সম্মানী ভাতায় কর্মরত। সারা দেশে এমন অবিভাগীয় কর্মচারী বা এঙ্ট্রা ডিপার্টমেন্টাল এজেন্ট (ইডিএ) রয়েছেন প্রায় ২৪ হাজার। এর মধ্যে রয়েছেন সাব-পোস্টমাস্টার, শাখা পোস্টমাস্টার, চিঠি বিলিকারী, ডাক বহনকারী ও চৌকিদার। এসব কর্মচারী সরকারি তহবিল থেকে সম্মানী পেলেও তাদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে স্থায়ী করে নেওয়া হয়নি। তারা প্রতিদিন ডিউটি করেন, বিনিময়ে ৩০-৩৫ টাকা ভাতা পান। দেশে ১০ হাজার ডাকঘরের মধ্যে গ্রামীণ ব্যবস্থাপনায় যে ৮ হাজার ডাকঘর রয়েছে সেসব ডাকঘরেই কাজ করছেন ২৪ হাজার কর্মচারীর বিশাল এই জনগোষ্ঠী। ডাক বিভাগের অবিভাগীয় কর্মচারীদের প্রতি এ আচরণ আর যাই হোক মানবিক নয়। তাদের ভাগ্যোন্নয়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। কর্তাব্যক্তিদের বুঝতে হবে ডাক বিভাগের অবিভাগীয় কর্মচারীরা অন্য সবার মতোই মানুষ। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার অধিকার তাদেরও প্রাপ্য। এক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।

 

 

সর্বশেষ খবর