মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

অর্থনীতির জন্য হুমকি

লাগাতার হরতাল-অবরোধ দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নামিয়েছে অপরিণামদর্শী কর্মসূচি। বন্দরগুলোতে আটকা পড়েছে লাখ লাখ টন পণ্যবাহী কনটেইনার। সময়মতো পণ্য জাহাজিকরণ এবং খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। দুই সপ্তাহ ধরে বন্দরে মালামাল আনা-নেওয়া প্রায় বন্ধ বললেই চলে। অবরোধজনিত প্রতিবন্ধকতায় সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছেন পচনশীল পণ্যের আমদানিকারকরা। স্থল ও সামুদ্রিক বন্দরের ওপর যেসব শ্রমিকের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল, তারা উপার্জনহীন অবস্থার শিকার হচ্ছেন। হরতাল অবরোধে পণ্য পরিবহন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে বিপুল পরিমাণ পণ্য আটকা পড়েছে। এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিমায়িত খাদ্য বা চিংড়ি রপ্তানি হয় মূলত মংলা বন্দর থেকে। হরতাল ও অবরোধে পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় হিমাগারগুলোতে শত শত কোটি টাকার চিংড়ি আটকা পড়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দরেও সৃষ্টি হয়েছে বিপর্যস্ত অবস্থা। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে অশনিসংকেত। লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভারত ও ভুটান থেকে আসা ফলমূলে পচন ধরেছে। ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক স্থলবন্দরে প্রবেশ করলেও অবরোধের কারণে তা স্থলবন্দর ছেড়ে কোনো গন্তব্যস্থলে পেঁৗছতে পারছে না। কোটি কোটি টাকার পণ্য পচে নষ্ট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে অচিরেই নিত্যপণ্যের সংকটে ভয়াবহ অবস্থার উদ্ভব ঘটতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দেশের আপামর মানুষের স্বার্থ জড়িত। অর্থনীতি মার খেলে সবকিছুতেই তার অপপ্রভাব পড়ে। সমঝোতার অভাবে রাজনৈতিক হানাহানি যেভাবে দানা বেঁধে উঠছে এবং দেশের অর্থনীতিকে গলা টিপে ধরার বিপদ সৃষ্টি করছে সে ব্যাপারে সতর্ক না হলে বিপর্যয় এড়ানো সত্যিকার অর্থে কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা মনে করি, দেশের স্বার্থে সরকার ও বিরোধী দলকে সংঘাতের বদলে সমঝোতার পথে এগোতে হবে। রাজনীতিকদের ভুলে ১৬ কোটি মানুষের এই জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর