মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

এইডসের আগ্রাসন

বাংলাদেশে এইডসের আগ্রাসন ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। দুনিয়ার যেসব দেশে এই মরণব্যাধির থাবা সবচেয়ে কম বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি হলেও তাতে যে স্বস্তির অবকাশ নেই এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা তারই প্রমাণ। ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমিত নতুন রোগীর সংখ্যা ৩৭০ জন এবং এ বছর এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ জন। এ বছর মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮২ জন। অথচ তার আগের বছর এইআইভি সংক্রমিত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৩৮ জন, যার মধ্যে এইডস রোগী ছিল ১০৩ জন। ২০১২ সালে এইডসে মারা যায় ৬৫ জন। এইডসে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক মূল্যায়নে যে কোনো দেশের চেয়ে অনেক কম। এমনকি পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি মুসলিম অধ্যুষিত দেশেও এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশের এক শতাংশ জনসংখ্যা অধ্যুষিত অনেক আফ্রিকান দেশে এইডসে আক্রান্তের হার একশ গুণেরও বেশি। এইডসের বিস্তৃতি ঘটে বিবাহবহির্ভূত বেপরোয়া যৌন মিলনের কারণে। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু। ইসলামে যেহেতু বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক অনুমোদন করা হয় না, সেহেতু এইডসের আগ্রাসন থেকে তুলনামূলক বিচারে বাংলাদেশ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এতে স্বস্তির কোনো অবকাশ নেই এ কারণে যে, এইচআইভি/এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা এদেশে ক্রমেই বাড়ছে। বেড়েই চলেছে এ রোগে মৃত্যুর হারও। এইডস একটি দুরারোগ্য রোগ। যার শতভাগ নিরাময় এখনো মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। নিরাময়ের ক্ষেত্রে মানুষের সীমাবদ্ধতা থাকলেও সচেতন হলে এই মরণব্যাধি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। আমাদের দেশে এইডস সীমিত রয়েছে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণে। এইডস কিংবা এইচআইভি থেকে দূরে থাকতে আলেম তথা পুরোহিতরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। সমাজের ওপর তাদের যে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তা কাজে লাগিয়ে তারা সাধারণ মানুষকে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক থেকে দূরে রাখতে পারেন।

 

 

সর্বশেষ খবর