সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

তারানকোর মিশন

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের বিশেষ দূত অস্কার ফারনান্দেজ তারানকো হতাশায় নিমগ্ন জাতিকে কি আশার আলো দেখাতে পারবেন? এমন একটি প্রশ্ন দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষকে তাড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। বলাই বাহুল্য, বিদ্যমান সংকট থেকে জাতি রেহাই পাবে কিনা তা অনেকাংশে তারানকোর বাংলাদেশ সফরকালেই নির্ধারিত হবে। আশার কথা জাতিসংঘের দূত দূতিয়ালী সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের বিষয়ে তারা আশাবাদী। সবাইকে নিয়ে প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানসহ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছেন নির্বাচনী তফসিল পেছানো যায় কিনা? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটি তার আওতাভুক্ত বিষয় নয়। নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনী তফসিল পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন। স্মর্তব্য, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এর আগে আভাস দেওয়া হয়েছিল, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে নির্বাচনী তফসিলে রদবদল হতে পারে। অর্থাৎ সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে ঐকমত্য হলে নির্বাচন কমিশন সে ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। জাতিসংঘ দূত সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকেই সমঝোতার চেষ্টা করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই বলা হয়েছে, সমঝোতাই হোক তা হতে হবে সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে। এখন সংবিধানে পরিবর্তন আনার সুযোগ না থাকায় বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই সমঝোতার পথ খুঁজতে হবে। সরকার ও বিরোধী দল জাতিসংঘের দূতিয়ালীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করায় অন্ধকারের মধ্যে আলোর দিশা হয়ে তা জ্বলে উঠেছে। তবে এ দূতিয়ালী সফল হবে কিনা তা প্রধান দুটি দলের সদিচ্ছার ওপরই নির্ভরশীল। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হলে দুই পক্ষকেই আপসহীনতার বিষমন্ত্রের বদলে সমঝোতার অমীয় সুধার প্রতি আস্থা রাখতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থকে পাশ কাটিয়ে বৃহত্তর কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, সমূহ সর্বনাশ না চাইলে দুই প্রধান দল সমঝোতার পথে এগিয়ে আসবে। গোয়ার্তুমির ধারা থেকে সরে এসে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনাকে প্রশ্রয় দেবে। তাতেই তাদের কল্যাণ।

সর্বশেষ খবর